রবিবার, আগস্ট ১৭, ২০২৫

পিএমখালীর পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকার বিরুদ্ধে নানান দূর্নীতির অভিযােগ

আপডেট:

এম এ সাত্তার, কক্সবাজারঃ কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা জেসমিন সুলতানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দূনীর্তির অভিযােগ পাওয়া গেছে।

পরিদর্শিকা জেসমিন আক্তার এর বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের ব্যাপারে ২২ ডিসেম্বর সোমবার পিএমখালীর ১ নম্বর ওয়ার্ড ছনখোলা “হাজী আবুল হোসেন কমিউনিটি ক্লিনিকে” সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে সেবা নিতে আসা রোগীদের সাথে সরাসরি কথা বলে অভিযোগের শতভাগ সত্যতা পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

অভিযােগে জানা গেছে, পরিদর্শিকা জেসমিন আক্তার সরকারি চাকরি করার সুবাদে প্রতিমাসে একএকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে যাতায়াত পূর্বক নারী ও শিশু বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদেরকে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছেন।

সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক এর সেবা সমূহ ও ঔষধ বিতরণ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ওই পরিদর্শিকা কর্তৃক রোগীদেরকে প্রদান করা সেবা ও সরকারি সম্পদ বিনামূল্যে লেখা ঔষধ বিতরণে বাজার মূল্য হিসাবে রোগীদের কাছ থেকে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। এমনকি গর্ভবতীদের চেকআপের নামে মহিলাদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ টাকা এবং গর্ভসম্ভাভা মহিলাদের গর্ভবতী পরীক্ষার টেস্ট টিউব বিতরনে প্রতিটি টিউবের দাম নিচ্ছে ২০ টাকা। অথচ এই গর্ভ বা বেবি টেস্ট টিউব ও রোগীদেরকে দেওয়া ঔষধের এর গায়ে “পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সম্পদ, বিক্রয়ের জন্য নয়” লেখা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পরিদর্শিকা জেসমিন সুলতানার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে সে রোগীদের কাছ থেকে কোন টাকা নেননি বলে জানিয়ে অনধিকারে বলেন, সে নয় বরং কমিউনিটি ক্লিনিক সংশ্লিষ্ট সিএইচপি”রা ৫ টাকা করে নেন এবং তার অফিস কাঠালিয়া মুরা গেলে বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলে জানান।

সূত্রে জানা যায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও এলাকার ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিক সমূহে প্রাথমিক চিকিৎসা ও গর্ভবতী নারী ও শিশুদেরকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও টাকা ছাড়া কোন সেবা দিতে নারাজ ওই পরিদর্শিকা। গর্ভবতী সেকআপের নামে জনপ্রতি নিচ্ছে টাকা। সরকারি বিনামূল্যে ওষুধ টাকা দিয়েই কিনে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে রোগীদেরকে।এ ঔষধ বিতরনে যে যার কাছ থেকে যেভাবে পাচ্ছে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। গর্ভবতী নারীদের আয়রন ক্যালসিয়াম এর ঔষধ দিলেও বাজার ধরে নিতেছে টাকা।

সরেজমিনে উক্ত কমিউনিটি ক্লিনিক গিয়ে চেকআপ ও ঔষধ নিয়ে চলে যাওয়ার সময় টাকাঠোকা নিয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে প্রত্যেক মহিলা ও শিশু রোগী ওই মহিলা সেবা ও ঔষধের টাকা নিতেছে বলে সত্যতা স্বীকার করেন।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে গর্ভবতী এক মহিলারোগী জানান তার কাছ থেকে চেকআপ করার আগেই ২০ টাকা নিয়েছে। পরে আর চেকআপ করেনি। আয়রন ক্যালসিয়ামের ওষুধ চাইলে আরো ১০০ টাকা চান, পরে ৫০ টাকা দিতে বলেন। টাকা নাই বললে ১ পাতা ক্যালসিয়ামের ওষুধ হাতে দেন। তিনি বলেন ওই মহিলা কোন রোগীকে টাকা ছাড়া কোন সেবা বা ঔষধ দেয়না। এমনকি টাকা দিলে যে কোন ব্যক্তিকে চাহিদার তুলনায় ইচ্ছা মতো ওষুধ দিয়ে দেন বলেও ওই পরিদর্শিকার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন স্থানীয়রা।

ছনখোলা হাজী আবুল হোসেন কমিউনিটি ক্লিনিক এর পার্শ্ববর্তী বাড়ির এক মহিলা জানান তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে ২/৩ দিন ধরে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত। মেয়ের ঔষধ এর জন্য ক্লিনিকে গিয়ে আপার কাছ থেকে ওষুধ চাইলে টাকা দিতে বলেন। টাকা আনি নাই বলে জানালে ওষুধ নাই বলে আমাকে তাড়িয়ে দেন। আমার পরে আরো দুই-একজন জ্বর নিয়ে অসুস্থ রোগী আসছিল। টাকা না দেওয়ার কারণে তাদেরকেও কোন অসুখ নাই, জ্বর নাই বলে ঔষধ না দিয়ে ফেরত দেন আপা। অথচ আপার সামনে টেবিলের উপর ব্যাগে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অনেক ওষুধ দেখা যাচ্ছিল। সব ঔষধ ব্যাগে করে ফেরত নিয়ে যাচ্ছিল সে।

অভিযোগের বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপ-পরিচালক ডাক্তার পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য্য বলেন, সরকারি বিনামূল্যে সেবা দিতে গিয়ে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম বা সুযোগ নেই। এরকম কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত