ইমতিয়াজ চৌধুরী, স্পোর্টস ডেস্কঃ
টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি! ক্রিকেটের আলাদা তিনটি সংস্করনের খেলার ধরণটা যেমন ভিন্ন, তেমনি ব্যাট-বলের আচরণেও রয়েছে বিস্তর ফারাক। এই যেমন কুড়ি ওভারের খেলা টি-টোয়েন্টিতে চলে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। সাথে উইকেট পতনের সেলিব্রেশন ম্যাচের রং বদলে দেয় মুহূর্তেই।
যেখানে বল গিলার সুযোগ নেই বিন্দুমাত্র। স্মার্ট ক্রিকেটের যুগে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে দুইশোর্ধ্ব রানও অনিরাপদ বাইশ গজের ময়দানি লড়াইয়ে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের দুনিয়ায় তার ব্যাটে শোভা পাচ্ছে ডিফেন্সিভ ক্রিকেট। বলে রানে প্রায়ই সমান এই ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইকরেট ইনিয়ে বিনিয়ে ১১০ এর কিছু কম।
বলছিলাম সদ্যশেষ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে খেলা টাইগার পাড়ায় ‘ড্যাশিং ওপেনার’ এর তকমা পাওয়া তামিম ইকবালের কথা। সেরা দশ রান সংগ্রাহকের তালিকায় থাকা তামিমের অবস্থান সপ্তম। নজরকাড়া গড় নিয়েও চার-ছক্কার ফরম্যাটে তার ব্যাটিং বড্ড বেমানান। কেননা গোটা টুর্নামেন্টে ৩৯৬ রান করতে ৩৬২ বল মোকাবেলা করেছেন তিনি! গড় ৩৯.৬০ আর স্ট্রাইকরেট ১০৯.৩৯! যা টি-টোয়েন্টির সাথে মোটেই যায় না।
১২ ম্যাচের সবকটি ইনিংসেই ব্যাট হাতে ওপেনিংয়ে নেমেছেন তামিম। পেয়েছেন পাওয়ার-প্লে এর মতো দ্রুত রান তোলার সুবর্ণ সুযোগ। সেই কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। স্ট্রইকরোটেট জিনিসটা মেলাতে গেলে, রান আর বলের পার্থক্য মাত্র ৩৪। শতক তো নেই-ই, দেশের অন্যতম এই সিনিয়র ক্রিকেটারের ব্যাটে অর্ধশতকের সংখ্যা মাত্র ৩টি। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ৭৪ রানের। ৩৬ চারের পাশাপাশি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ১১টি।
যেখানে একই সময়ে সেরা দশে থাকা অপর ছয় ব্যাটসম্যান এর স্ট্রাইকরেটটা ১৩০, ১৪০ কিংবা তারও উপরে। এই দৌড়ে হালের আফিফ, লিটনরাও পেছনে ফেলেছে তামিমকে। মুশফিক তো সবারই আলাদা, দেশীয়দের মধ্যে এক নম্বর এই ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইকরেট প্রায় দেড়শ ছুঁই ছুঁই (১৪৭.০০)। টেস্ট মেজাজি ইমরুল কায়েসের এবারের বিপিএল কেটেছে ১৩২.৩৩ স্ট্রাইকরেটে। সবচেয়ে কম স্ট্রাইকরেট কেবল নাঈম শেখ এর ১১৫.৪৩। তাও পাঁচেরও বেশি এগিয়ে, ড্যাশিং ওপেনারের চেয়ে।
উল্লেখ্য; আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৭৫ ম্যাচ খেলা তামিম ২৩.০৪ গড়ে রান করেছেন ১৬১৩। স্ট্রাইকরেট ১১৬.৮৮! একটি শতকের বিপরীতে অর্ধশতক ৬টি। সর্বোচ্চ ১০৩ রানের ইনিংসটি ২০১৬ সালে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে।