শনিবার, আগস্ট ১৬, ২০২৫

পটিয়ায় বোন মেরু ক্যান্সারে কেড়ে নিল শিশুর প্রাণ

আপডেট:

কাউছার আলম,পটিয়া:
পাঁচ বছর বয়সী রায়না জন্মের পর থেকেই চঞ্চল প্রকৃতির ছিল। বাড়ির সবাইকে মাতিয়ে রাখতে তার ঝুঁড়ি ছিল না। অল্পতেই তুষ্ট থাকতো রায়না। বিদ্যালয়ে পা রাখার বয়স না হলেও মায়ের সাথে অক্ষর জ্ঞানের হাতেখড়ি ছিল বলা বাহুল্য। একবার মুখ থেকে বের করে বললেই হলো পরবর্তীতে আর মাকে বলতে হতো না। এমনকি চক পেন্সিল দিয়েও একবার লিখে দিলেই হতো। অবিকল লিখে দেখাতো মাকে।

এতক্ষন যার কথা বললাম তার নাম রায়না সূত্রধর। পটিয়া উপজেলার ৫নং ওয়ার্ডের সূত্রধর পাড়ার অতি দরিদ্র কাঠ মিস্ত্রি বাবা তপন সূত্রধর ও চুন্ধু সূত্রধরের আদরের মেয়ে রায়না। আগামী বছর জানুয়ারীতে নতুন স্কুলে ভর্তী হওয়ার কথা ছিল রায়নার। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় অকালে মরন ব্যাধি বোন মেরো ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে (শনিবার) রাত তিন টার দিকে চলে যায় না সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে।

বিজ্ঞাপন

রায়নার পরিবার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের মে মাসে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকের স্বরনাপন্ন হলে ইনভেস্টিগেশনে ধরা পরে বোন মেরো ক্যান্সার নামক মরন ব্যাধিটি। এরপর ডাক্তার বলে দেন বেশিদুর ৫-৬ মাস বাঁচার সম্ভাবনা। অত্যন্ত ব্যায়বহুল এ রোগের চিকিৎসা করা দরিদ্র কাঠ মিস্তি বাবার পক্ষে একেবারে অসম্ভব। এরপর যতদিন যায় আস্তে আস্তে রায়নার শারিরীক অবস্থা ততই অবনতি হতে থাকে। এমনকি রায়নার দু’চোখের অবস্থা ভয়ংকর রুপ নেয়।

এমন অবস্থায় এলাকায় প্রতিবেশী ও সকলের সহায়তায় মনকে বুঝানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভারতের ভেলোর সিএমসি হাসপাতালে। সেখানেও চিকিৎসকেরা জানায় ব্যায়বহুল এ রোগের চিকিৎসা খরচ পড়বে ৮০-৯০ লাখ টাকা। তাও বাঁচার সম্ভাবনা ফিফটি- ফিফটি। এ অবস্থায় এগারো দিন অবস্থানের পর চলে আসে দেশে।

বিজ্ঞাপন

এরপর দরিদ্র বাবার পরিবারে যা হবার তাই হয়েছে। অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে রায়না গতকাল রাতে। তার মৃত্যুতে পুরো সূত্রধর পাড়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। রায়নাকে একনজর দেখতে ভিড় করেন পাড়া প্রতিবেশীরা। আজ তাকে পারিবারিক শ্বশানে দাহ করা হয়েছে। এর আগে মাত্র সাত মাস বয়সে তপন সূত্রধরের প্রথম ছেলে সন্তানকে হারান। এবার ফুটফুটে মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে বাবা মা। তাদের আর রইল রমা সূত্রধর নামের এক মেয়ে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত