রবিবার, আগস্ট ১৭, ২০২৫

পিএমখালীর সংযোগ সড়কের ভাঙ্গা রাস্তার সংস্কার নেই, দুর্ভোগে দুই ইউনিয়নের মানুষ

আপডেট:

কক্সবাজার, এম এ সাত্তারঃ
কক্সবাজার সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন পিএমখালী (পাতলী মাছুয়াখালী)। শতাব্দি পেরিয়ে প্রবাহমান নদী বাঁকখালীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ বিহীন জনগণের একটি বসতিস্থল। পিএমখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ছনখোলা জনবহুল এলাকায় বড় সড়ক ও আবার একটি। এ মাটির রাস্তাটি শোভা পাচ্ছে সংযোগ সড়ক নামে।

প্রায় ১০ বছর আগে পিএমখালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাষ্টার আবদুর রহিম এর প্রচেষ্টায় কয়েকটি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধার্তে ছনখোলা বাজার থেকে খুরুস্কুল ইউনিয়নের কুলিয়া পাড়ার পিচ রাস্তার মাথা পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তাটি নির্মাণ করেন। এরপর প্রায় হয়ে গেলো এক দশকের কাছাকাছি কিন্তু রাস্তাটি সেই আগের মতই রয়ে গেলো। সরেজমিন দেখা যায়, এই এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষেরা একমাত্র এই রাস্তাটিই ব্যবহার করেন যোগাযোগের সুবিধার্থে সময় বাঁচানোর জন্য। আর রাস্তাটি মাটি বালির তৈরী জরাজীর্ণ, বর্ষা কালে কাদামাটি,ছোট বড় গর্ত হওয়ার ফলে এ রাস্তা ব্যবহারে পথচারীরা অতিষ্ঠ। ছনখোলা ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ ও কেফায়েত উল্লাহসহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা এ রাস্তা পাকাকরনের ব্যাপারে স্থানীয় এমপির বরাবর শুরু থেকেই জোরালো আবেদন করে আসতেছি। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুলহক জুয়েলকে নির্বাচন পরবর্তী সম্বর্ধনা অনুষ্টানে মৌখিকভাবে জানানো হলে তিনি উক্ত রাস্তাটি অগ্রাধিকার ভিক্তিতে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর উপজেলার নেতারা আজ ৭/৮ বছর যাবত বলতেছে টেন্ডার হল, কাজ হচ্ছে, ফাইল প্রক্রিয়াধীন আছে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু আমরা এ আশায় থাকলেও এখনো সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সরকার ও সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) বরাবরই দুই কিলোমিটার এ সড়কটির প্রতি অবিচার করে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ বিগত একযুগ ধরেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ নুন্যতম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগায়নি উক্ত সংযোগ দুই কিলোমিটার সড়ক জুড়ে। যে কারনে এ সড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহন ও সাধারণ মানুষেরর দুর্ভোগ সইবার সীমা হারিয়ে ফেলেছে। তাই বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে অনুধাবন করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সংসদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ তৎসংশ্লিষ্টদেরপ্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা। যদিও এ সড়কটির শহরের সাথে সংযুক্ত অংশ। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম জিএম রহিম উল্লাহ ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমের আন্তরিকতায় বর্তমান সরকারের আমলে পিএমখালী এলাকা অনেকটা চলাচলের উপযোগী করেছেন বলে স্বীকার করেন স্থানীয় অনেক মানুষ।২০১৭-১৮ অর্থ বছরে উপজেলা উন্নয়ন তহবিল (রাজস্ব) এডিপি, এলজিএসপি, ওয়ান পার্চেন্ট এর আওতায় এ ইউনিয়নে কোটির অধিক টাকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাকি অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার পাশাপাশি ছনখোলা থেকে কক্সবাজার সংযোগ সড়কের দুই কিলোমিটার সড়ক যদি সংস্কার করা হয় তবে আগামী ১০ বছরেও এ সড়কে হাত দিতে হবেনা বলে আশা করেন স্থানীয়রা। সুত্রমতে, পিএমখালী ইউনিয়নের পাশ্বর্বর্তী অন্য ইউনিয়নের মানুষের ছনখোলার সংযোগ সড়কটি বিকল্প হিসেবে বেশ দরকার রয়েছে। খুরুস্কুল ইউনিয়নের একাংশসহ পিএমখালীর প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস ওখানে।

এ এলাকায় অনেক উচ্চবিত্ত পরিবার থাকলেও তারা সময়ে অসময়ে শহরে বসবাস করে আসছে। আর এখন এ এলাকায় নিম্ন-মধ্যবিত্ত খেটে খাওয়া সাধারণ পরিবারগুলো বসবাস করে আসলেও যুগ ধরে গুরুত্বপূর্ন এ সড়কটিতে নুন্যতম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, এক সময় মাটি ভরাট করে ইট আর বালু দিয়ে সড়কটির উন্নয়ন করা হয়েছিল। ওই উন্নয়নই শেষ উন্নয়ন।

বিজ্ঞাপন

এ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সড়কটির উন্নয়নের জন অপ্রাণ চেষ্টা করলেও এখনও পর্যন্ত বড় কোন নেতার সু’নজরে আসেনি। ফলে প্রতি বর্ষামৌসুমে এ পথ দিয়ে সর্বসাধারনের চলাচলের উপায় থাকেনা। সড়কটির বিভিন্ন অংশে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত হয়ে বর্তমানে যানচলাচলে একপ্রকার অচল। এসব গর্তের কারণে যানবাহন চালকদের বোঝার উপায় থাকেনা, যে কারনে প্রায় সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ছোটখাট যানবাহনগুলো। আর এসব দুর্ঘটনার কারনে যাত্রীরা আহত হয়ে পঙ্গুত্বের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। তাছাড়া বর্ষাকালে সড়কটির পুরো অংশ জুড়ে গর্ত, পানি আর কাঁদা মাটি থাকায় এ পথ দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলেরও কোন উপায় থাকেনা। এলাকাবাসীরা জানান, গ্রামের মানুষ কক্সবাজার শহরসহ অন্য এলাকায় আশা যাওয়া করতে সহজ পথ হিসেবে এই সড়ক ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু স্থানীয় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়া আর কোন তদবির করার লোক না থাকায় দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবত রাস্তাটির জন্য মোটা অংকের বরাদ্ধ আসেনি।

সরকারি অনুদান ২/১ লাখ টাকা এলেও তা দিয়ে এ রাস্তার গর্ত ভরাটের কাজও শেষ করা যায় না। রাস্তার প্রয়োজন অনুসারে অনুদানের টাকা অপ্রতুল হওয়ায় তা দিয়ে রাস্তা সংস্কার করে অচল রাস্তাকে কিছু দিন সচল করা হয়। এরপর কদিন ব্যবহারে এ কাঁচা রাস্তা ভেঙ্গে চুরে পূর্বের চেহারায় ফুটে উঠে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে। সকালে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায় এই সড়ক পথে। এসময় ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায় বলে জানিয়েছে ইকরা হোসেন (১৩) ও রোকেয়া বেগম (১২) নামে দুজন ছাত্র-ছাত্রী। এসব রাস্তায় দীর্ঘদিন যাবৎ কোন সংস্কার কিংবা নির্মানের কাজ করা হয়নি বলেও জানান তারা। এ ব্যাপারে পিএমখালীর ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার আবদুর রহিম বলেন ইউপি পরিষদে দুই লাখ টাকার উপরে বাজেট বরাদ্ধ হইনা।কোটি টাকার প্রকল্প হওয়ার কারণে আমাদের আয়ত্তের বাইরে। তাই এ রোডের ব্যাপারে উর্ধতন অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আসছেন। যার কারণে কোন মাধ্যম না ধরে নিজেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শীঘ্রই এ রোডের বাজেট বরাদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত