রবিবার, আগস্ট ১৭, ২০২৫

বাঁশখালীতে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করে অন্তঃসত্ত্বা,পরে নষ্ট!

আপডেট:

মুহাম্মদ দিদার হোসাইন,
বাঁশখালী(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে স্কুলে পড়ুয়া ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ধর্ষণ করার ফলে ধর্ষিতা অন্তঃসত্ত্বা,পরে ধর্ষক কৌশলে প্যাগনেট নষ্ট করেছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের আনছুর আলী মিয়াজির বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে।ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ায় পুরো এলাকা জুড়ে চলছে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়।

বিজ্ঞাপন

০১ অক্টোবর(শুক্রবার)সকালে অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্তকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত মেয়ের মা বলেন,আমাকে মেয়ে নাপোড়া-শেখেরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে,গত বছর আমার স্বামী মৃত্যু বরণ করেছে,তাহার মৃত্যুর পর থেকে পারিবারিক খুবই অভাব অনটনে আছি, মেয়ের বাবার মৃত্যুর পর থেকে পারিবারিক অভাবের কারণে ঠিক সময়ে আমার মেয়েকে স্কুলেও পাঠাতে পারিনি,এই অবস্থায় আমার এলাকার নাছির উদ্দীনের ছেলে মহিউদ্দিন আমাদের অজান্তে গোপনে আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গোপনে শারীরিক সম্পর্ক করে,উপর্যুপরি ধর্ষণের করায়একপর্যায়ে আমার যে মেয়ে ৩/৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে তাও আমি জানতামনা।কিন্তু সর্বশেষ ঘটনার ৩/৪ দিন আগে আমার মেয়ে পায়ে আঘাত পেয়েছিল সেই সুবাদে গোপনে আমার মেয়েকে পায়ের চিকিৎসা করার কথা বলে স্থানীয় বশির আহমদের স্ত্রীর আইমন আকতার ও অভিযুক্ত মহিউদ্দিন যোগসাজশে ১ সেপ্টেম্বর ২১ ইং তারিখে ডাক্তারের কাছে যে নিয়ে গেছে তাও আমি জানিনা,পরে জানতে পারি যে আমার মেয়েকে নাপোড়া-শেখেরখীল স্থানীয় হাসি ভুট্টাচার্য্য মালিকানাধীন মেরি স্টোপ ক্লিনিকে নিয়ে আইমন আকতার,মহিউদ্দিন ও শোভা ভুট্টাচার্য্য সহ জোর পূর্বক এভোশ্যান(abotion) করিয়ে প্যাগনেট নষ্ট করেদে,এসময় আমার মেয়েকে তারা বলে যে আগে তোকে বাচাই পরে তোর বিয়ের ব্যবস্থা করবো,এমনকি তারা আমার মেয়েকে বলে যে ঘটনার কথা কাউকে জানালে তাকে এবং তার ভাইদেরকেও প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকিও দেন তারা।ঘটনার পর মুমূর্ষুবস্থায় আমার মেয়েকে ঘরে পাঠিয়ে দিলে আমার মেয়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকলে উল্লিখিত ঘটনার সব কথা মেয়ে আমাকে বললে আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে আমি ঘটনা বিষয়টি অবহিত করিলে স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিরা অভিযুক্ত মহিউদ্দিন এর বাবা নাছিরকে জানান।প্রথমে অভিযুক্ত মহিউদ্দিন এর বাবা নাছির উদ্দীন ঘটনার ব্যাপারে আইমন আকতারের স্বামী বশির আহমদের মাধ্যমে আমার ভাইকে= ১০০০০০(এক লক্ষ টাকা)’র বিনিময়ে মিমাংসা করার কথা বলে কিন্তু পরে স্থানীয়রা অভিযুক্তদের বৈঠকে আসতে বললে তারা বৈঠকে আসেনি।এমনকি তারা আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে প্রাণনাশের হুমকিও করছে বলে জানান বাদীনির মা।

এব্যাপারে মেয়ে মামা মীর হোসেন বলেন,আমার ভাগিনির অবস্থা খুবই আশংকাজনক তাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করছি।এব্যাপারে আমার ভাগিনি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ন্যায় বিচারের দাবীও জানান বাদীনি মামা।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মুহাম্মদ জাকারিয়া চৌধুরী রুবেল বলেন,ধর্ষণের বিষয়ে দু’পক্ষের কেউ আমাকে জানায়নি।তবে এখন আমি আমার ওয়ার্ডের চৌকিদারের কাছ থেকে জানতে পেরেছি।ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক,মামলার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান ইউপি সদস্য রুবেল।

এই ব্যাপারে নাপোড়া-শেখেরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,নাছির উদ্দিনের ছেলে মহিউদ্দিন আমার স্কুলের পড়তো সেই সুবাদে বিগত সাপ্তাহ দুই এক পূর্বে নাছির উদ্দীন স্কুলে এসে তার ছেলে মহিউদ্দিন এর নামে একখানা প্রত্যায়ন পত্র নিয়ে গেছে।ওই সময় আমি এধরণের কোন ঘটনার কথা শুনিনাই।বাদীনি ওই স্কুলের ছাত্রী বলে দাবি করলেও শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকার ফলে প্রধান শিক্ষক এটা নিশ্চিত বলতে পারননি,তবে স্কুল খোলার তারিখে সেটি নিশ্চিত বলতে পারবেন বলে জানান শিক্ষক জাহাঙ্গীর।এসময় তিনি আরো বলেন,ধর্ষণর বিষয়টি খুবই দুঃখজনক,অভিযুক্ত যেই হোকনা কেন মামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান শিক্ষক জাহাঙ্গীর।

এব্যাপারে শেখেরখীল ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন তালুকদারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন রিসিভ না হওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ঘটনার বিষয়ে ধর্ষিতা বাদী হয়ে নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যালে মহিউদ্দিন ধর্ষক (২২) পিতা নাছির উদ্দীন,নাছির উদ্দিন(৫৫) পিতা খুইল্ল্যা মিয়া এবং কমরু বেগম(৪০) স্বামী নাছির উদ্দীনকে আসামি করে ৪৩৬/২১ ইং- মামলা দায়ের করেছে বলে জানান বাদিনীর মামা।এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা(পিআইবি) মাসুদুর রহমান রানা এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেন জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত