মুহাম্মদ জুয়েল, বোয়ালখালী:
প্রত্যেকটি জায়গা যিনি সকল মানুষের মনের ভাষা বুঝতেন তিনি হলেন মাঈন উদ্দীন খান বাদল। শুধু তাই নয় তিনি যখন সংসদে প্রবেশ করতেন খুব অহংবোধ নিয়ে হেটে যেতেন, আবার যখন তিনি সাধারণ মানুষের মাঝে এসে বসতেন তখন খুবই সাধারণ হয়ে কথা বলতেন।
চট্টগ্রাম ৮ আসনের সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আলহাজ্ব মঈন উদ্দীন খান বাদলের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
৭ নভেম্বর (শনিবার) বিকাল ৩টায় বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামে প্রয়াত সাংসদের কবর প্রাঙ্গণে খতমে কোরআন, দোয়া মাহফিল ও পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামীলীগ, জাসদ সহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মনির আহমদ খানের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক সিকদারের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সহ সভাপতি এডভোকেট আবু মোহাম্মদ হাশেম,সাবেক ০৩নং পাঁচলাইশ কাউন্সিলর কফিল উদ্দীন, ৭নং পশ্চিম ষোলশহর কাউন্সিলর মোবারক, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা বেলাল হোসেন, মুহাম্মদ মোকাররম, অধ্যক্ষ সমীর কান্তি দাশ, অধ্যক্ষ মাওলানা আতাউল মোস্তাফা, অধ্যক্ষ মুফতি মাওলানা আব্দুর রহিম,
বোয়ালখালী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা কমান্ডার নুরুল ইসলাম, চান্দগাঁও থানার জাসদ সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার আলম, সাংবাদিক অধীর বড়ুয়া, সেকান্দর আলম বাবর, কাজী আয়েশা ফারজানা, রাজু দে, দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু, আবু নাঈম, জয়নুল আবেদীন,
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের উত্তর জেলার সভাপতি বাবু বানু রঞ্জন চক্রবর্তী, আমুচিয়া সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন, বিএনএফ কমান্ডার বাবু রঞ্জনদ্র প্রসাদ চৌধুরী, কানাই দাশ লাল গুপ্ত, আশরাফ, সেলিম, জি এস হাসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর ৭টা ৪৫ মিনিটে ভারতের বেঙ্গালুরুর নারায়ণা হৃদরোগ রিসার্চ ইনস্টিটিউট এন্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মইন উদ্দীন খান বাদল। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আহমদুল্লাহ খান ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা।
১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে জড়িয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। ষাটের দশকে আওয়ামী ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা বাদল একাত্তরের রণাঙ্গনে জীবনবাজি রেখে লড়েছেন দেশমাতৃকার জন্য।
রাজনীতি ও বিভিন্ন কারণে অনেক দেরিতে ১৯৮৫ সালের দিকে চাঁদপুরের সেলিনা খানকে বিয়ে করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাদল সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন। জাসদ, বাসদ হয়ে পুনরায় জাসদে আসেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল’র (জাসদ) কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল। একজন দক্ষ পার্লামেন্টেরিয়ান হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন তাঁর কর্মদক্ষতা দিয়ে। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় আসন থেকে মহাজোটের নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। জীবনের শেষ বয়সে এসে কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নে সোচ্ছার ছিলেন তিনি। ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে সংসদ থেকে পদত্যাগেরও ঘোষণা দেন তিনি।