তাহমিদ লিয়াম,
উত্তরটি হচ্ছে ‘উইলফ্রেড রোডস’। কে এই উইলফ্রেড রোডস?
ইংল্যান্ডের হয়ে শুধু ৫৮টি টেস্ট খেলা অলরাউন্ডার উইলফ্রেড রোডস। ১৮৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ১২১তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তার৷ এরপর ব্যাট হাতে ২,৩২৫ রান ও বল হাতে ১২৭ উইকেট শিকারী এই ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১৭৯ এবং সেরা বোলিং ফিগার ৮/৬৮! এছাড়াও ক্যারিয়ারে মোট ১১টি ফিফটি, ২টি সেঞ্চুরি ও ৬ বার ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়া উইলফ্রেড রোডস-ই প্রথম ইংলিশ টেস্ট ক্রিকেটার যার ব্যাট থেকে ১০০০ রান ও বল হাতে ১০০ উইকেট তুলে নেওয়ার রেকর্ড আছে!
অভিষেকের পর ১৯২১ সাল পর্যন্ত টানা খেলতে থাকেন৷ এরপর ১৯২৬ সালে ৪৮ বছর বয়সে অ্যাশেজ সিরিজের মাধ্যমে আবারও ফিরেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। সেই সিরিজেই দূর্দান্ত পারফর্ম করে ১৯১২ সালের পর আবারও ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখেন।
১৯৩০ সালে উইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের সবশেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলেছিলেন ৫২ বছর বয়সে যা কি-না এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বয়সে টেস্ট খেলার রেকর্ড!
১৮৯৮ সালে ইয়র্কশায়ারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন স্লো লেফট আর্ম বোলার হিসেবে। পরবর্তীতে বিশ্বেরই সেরা স্লো লেফট আর্ম বোলারের খেতাব পেয়ে যাওয়া এই ইংলিশ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর নিজের ব্যাটিং স্কিলকেও নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায় যা তাকে ইংল্যান্ডের একজন প্রতিষ্ঠিত অলরাউন্ডারের মর্যাদা এনে দেয়। ব্যাটিংটা তেমন দর্শনীয় না হলেও ছিলেন অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একজন। অতিরিক্ত ধীরগতির ব্যাটিংয়ের জন্য হয়েছিলেন সমালোচিতও। তবে ক্রিকেট নিয়ে তার চিন্তাভাবনা ছিল অত্যন্ত বিচক্ষণ।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার চেয়ে বেশি ম্যাচ আর কোন ক্রিকেটার খেলেনি! সবমিলিয়ে খেলেছেন ১,১১০ ম্যাচ! সেখানে ৫৮টি হান্ড্রেড এবং ১৯৭টি হাফসেঞ্চুরির কল্যাণে মোট সংগ্রহ ৩৯,৯৬৯ রান; সর্বোচ্চ ২৬৭*।
এছাড়া জীবনের তাগিদে কৃষিকাজও করা এই ক্রিকেটারের চেয়ে বেশি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উইকেট আর কারো নেই। নিখুঁত ও বৈচিত্র্যময় বোলিং দিয়ে মোট শিকার ৪,২০৪ উইকেট! সেরা বোলিং ফিগার ৯/২৪ এবং ইনিংসে মোট ৫ উইকেট শিকার করেছেন ২৮৭ বার ও ম্যাচে ১০ উইকেট ৬৮ বার! ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ধরেছেন ৭৬৫টি! এক ইংলিশ মৌসুমে রেকর্ড ১৬ বার ১০০০ রান ও ১০০ উইকেট শিকারী একমাত্র ক্রিকেটারও কিন্তু তিনি!
ক্রিকেট ছাড়ার পর কোচিং করলেও সেখানে তেমন কোন সাফল্য ছিল না। ১৯৩৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলতে থাকা এই ক্রিকেটার ১৯৫২ সালে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান।
১৯৭৩ সালের ৮ জুলাই ৯৫ বছর বয়সে মারা যাওয়া এই ক্রিকেটার ১৮৭৭ সালের ২৯ অক্টোবর যুক্তরাজ্যের কার্কহিটনে একটি কৃষি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।