মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, চট্টগ্রাম:
বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারি ভাইরাস থেকে রক্ষায় ফটিকছড়ি উপজেলায় কোভিড- ১৯ বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে। ফটিকছড়ির সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে প্রস্তুত হতে যাওয়া হাসপাতালটি সম্পূর্ণভাবে বেসরকারি উদ্যোগে হওয়ায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। উপজেলার ২০ শয্যার এই হাসপাতালকে কোভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতালে রূপান্তরের উদ্যোগে ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সমাজসেবক, বিভিন্ন সংগঠন অর্থ সহায়তা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে।
এবার এই কাতারে যুক্ত হলো দৈনিক ১০২টাকা আয়ের চা শ্রমিকরা। যেখানে এ সামান্য আয় দিয়ে নিজের পরিবার চালাতেই কষ্ট হয়ে যায় সে অবস্থা থেকে ৫,১০,১০০টাকা দিয়ে তারা ২৫০১৯টাকা ফটিকছড়ি কোভিট-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতাল রূপান্তরের জন্য সহযোগিতা করল, যা দেখে সবাই আবিভূত।
মঙ্গলবার (১৪ই জুলাই) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এ টাকা হস্তান্তর করেন তুহিন ইসলাম,শাখাওয়াত শাওন, হোসাইন মাহমুদ, সিটন দে, সাহেদ, রাহিদ।
এ ব্যাপারে শাখাওয়াত শাওন বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সবার কাছ থেকে টাকা গুলা সংগ্রহ করি। দিনশেষে তারা ১০২টা বেতন পায়, তাদের ভাল মন্দ খাওয়ারও ভাগ্যে জুটেনা, অনেক সময় উপস দিনাতিপাত করেন , নেই নিজস্ব কোন অর্থ-সম্পদ। তাদের এ সামান্য টাকা আয় থেকেই আমরা বিশাল এক সংখ্যার অনুদান আজ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট হস্তান্তর করেছি। বিশাল বলার কারণ এই যে হয়তো অনেকে ২৫হাজার টাকা সারাজীবনে জমিয়ে রাখতেও পারেনা। আমাদের এ শ্রমিক ও স্থানীয়রা যারা অনুদান দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন বলেন, ফটিকছড়ির মানুষ কতোটা আন্তরিক তা হয়তো করোনা না আসলে বুঝতেই পারতাম না। কোটি টাকার হাসপাতালে কিভাবে হবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম কিন্তু এ অল্প সময়ে সে চিন্তা দূর হয়েছে। এবার আমি সত্যিই আবিভূত, আমার কৃতজ্ঞতা বা ধন্যবাদ জানানোর কোন ভাষা জানা নেই। যে মানুষ গুলা দিনে এনে দিনে খায়। অনেক সময় দু’বেলা দুমুঠো খাবার যাদের জুটেনা তাদের থেকে পঁচিশ হাজার টাকা অনুদান আমি ভাবতেই পারছিনা। সত্যিই এ কষ্ট আমার সার্থক মনে হচ্ছে।