“দিদিমণি প্রধানমন্ত্রী”
মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান:
“ওরা টোকাই কেন “ বইটির লেখক আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বইটির ছয়টি প্রবন্ধের মধ্যে শেষ প্রবন্ধটির নাম “ওরা টোকাই কেন”। বইটির শুরু থেকে শেষ অবধি পড়লে পাঠক একজন হৃদয়স্পর্শী লেখকের লেখনী ক্ষমতা অনুধাবন করতে পারবেন ( বইটি সবাইকে পড়ার অনুরোধ রইল)।
বইটির প্রথামাংশের একটা লাইন মনকে মায়াজালে আঁকড়ে ধরেছিল । শ্রদ্ধার্ঘ শেখ কামাল যেভাবে মমতাময়ী বোনকে “হাচুপা” বলে ডেকেছিলেন সেই ডাক নিশ্চয়ই আজও লেখক শেখ হাসিনার কাছে অম্লান হয়ে আছে। শেখ কামাল আজ নেই , তবে ডাকার মত আমরা আছি। কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার কিছু লাইন ধরে আমারা আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে দিদিমণি বলে ডাকতেই পারি। কবির কবিতার মত করে এই বাংলায় সর্বজনিন দিদিমণি হওয়ার যোগ্যতা“ ওরা টোকাই কেন “ বইয়ের লেখিকা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকেই দেখি। রবিঠাকুর বলেছিলেন,
দিদিমণি
অফুরান সান্ত্বনার খনি।
কোনো ক্লান্তি কোনো ক্লেশ
মুখে চিহ্ন দেয় নাই লেশ।
কোনো ভয় কোনো ঘৃণা কোনো কাজে কিছুমাত্র গ্লানি
সেবার মাধুর্যে ছায়া নাহি দেয় আনি.
আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের চলমান পরিস্থিতিতে শক্তভাবেই হাল ধরেছেন। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে এ পর্যন্ত লকডাউন একের পর এক সময় বেঁধে এগিয়েছে। মনে হচ্ছিল চলিত দূর্যোগে দিদিমনি সময়কে সুতা বানিয়ে একের পর এক বেঁচে থাকার সম্ভাবনার কাঁথায় নিপুনভাবে ফোঁড় দিয়ে গেছেন।
এরই মধ্যে রমজান মাস অতিবাহিত হয়ে গেল।লকডাউনের মধ্যে ঈদ উল ফিতর পার করলাম। ঈদ আনন্দের চেয়ে একটি জীবনের মূল্য অনেক বেশী । লকডাউন ছিল বলে আক্রান্তের হার গগনচুম্বী হয় নাই।
হ্যাঁ, দীর্ঘ আটষট্টি দিনাধিক সময়ে দেশের অর্থনিতীর উপর একটি চাপ পড়েছে। পৃথিবীর সকল দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এমনই। একজন ব্যক্তির সাথে তার পুরো পরিবারের স্বপ্ন জড়িত। বেঁচে থাকতে পারলে একজন ব্যক্তি তার চলমান ক্ষতি কাটিয়ে তুলতে বাকী জীবনেই যতেষ্ট।
আমাদের ষোল কোটি দেশের জনবসতি অত্যাধিক ভাবে গা ঘেঁষা। লকডাউন চলাকালিন সময়ে এই গা ঘেঁষা ভাবটা মোটামুটি ভাবে একটু দূরুত্বের মধ্যেই ছিল। এভাবে সময় গড়িয়েছি,করোনা নিশ্চয়ই দূর্বল হয়েছে। আর কিছুদিন লকডাউন সীমা বাড়ালে ক্ষতির সীমাও কম থাকবে। সীমতভাবেও লকডাউন তুলে নিলে আবার গা ঘেঁষা পরিস্থিতে বিপদ ধেয়ে আসতে পারে।
বিশ্বব্যাপী অনেক ধনী আর ক্ষমতাধর পরিবারের সদস্য এই করোনাকালীন সময়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। বিদায় নিয়েছেন সেবার নিমিত্তে সম্মুখে থাকা ডাক্তার ও নার্স। সমাজকর্মী আর আইনশৃঙ্খলা নিরাপদ ও সমুন্নত রাখার কর্মীগন।প্রত্যয় জ্ঞাপন করছি তাদের প্রতি।
অর্থ দিয়ে এই ভাইরাস কে আটকানো সম্ভব নয়। একমাত্র উপায় নিরাপদ সামজিক দূরত্ব আর সূর্যদীপ্ত সচেতনতা। এই দেশের মানুষ অনেকটাই নীরিহ,অবুঝ । না বুঝেই পরে যেতে পারে এই করোনার থাবায়। আমাদের বাঁচাতে পারে একমাত্র লকডাউন ব্যবস্থা।
পত্রপত্রিকায় দেখছি জুন মাসটা বেশী বিপদসংকুল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ,আপনি অন্তত জুন মাসজুড়ে লকডাউন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখুন। বিণীত আবেদন। লকডাউনের প্রভাবে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে এদেশের জনগণ। আর যে সব রোগী হাসপাতালের বিছানায় আছেন তাদের যেন নতুন রোগীর চাপে চিকিথসা সেবা বিগ্নিত না হয়।
আপনার প্রতি এই নিবেদনটি কবিগুরুর কবিতার লাইন দিয়েই শেষ করছি,
ক্ষিপ্ৰ হস্তক্ষেপে
চারিদিকে স্বস্তি দেয় ব্যেপে;
আশ্বাসের বাণী সুমধুর
অবসাদ করি দেয় দূর।
এ স্নেহমাধুর্যধারা
অক্ষম রোগীরে ঘিরে আপনার রচিছে কিনারা;
লেখক: মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান।