‘সম্পদ বৃদ্ধি এবং পবিত্র’ করার অপর নাম “জাকাত”
“মুহাম্মাদ বোরহানউদ্দীন”
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্।
আাশা করি সবাই আল্লাহর অসীম রহমতে ভাল ও সুস্থ আছেন। সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আজকে দেশের অর্থনীতি হুমকির পথে।তাই আমি আপনাদেরকে জাকাত নিয়ে কিছু আলোচনা করতে যাচ্ছি। প্রিয় পাঠক জাকাত আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ- পবিত্র করা অথবা বৃদ্ধি পাওয়া।ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় জাকাত বলা হয় – শরীয়তের নির্দেশ ও নির্ধারণ অনুযায়ী নিজের সম্পদের একাংশের স্বত্বাধিকারী কোনো অভাবী গরীবের প্রতি অর্পণ করা এবং এর যেকোনো প্রকার মুনাফা হতে নিজেকে সম্পূর্ন দূরে রাখা।জাকাত আদায়ের দ্বারা জাকাত দাতার সম্পদ বৃদ্ধি পায় অথবা পবিত্র হয় এবং জাকাত দাতার অন্তর কৃপণতার কলুষ থেকে পবিত্র হয় আর এজন্যই জাকাতকে জাকাত বলা হয়।
জাকাত ইসলামের একটি মৌলিক বিধান।আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোনআনের ৩২ জায়গায় নামাযের সাথে জাকাতের কথাও বলেছেন।সুতরাং দারিদ্র্য বিমোচনে জাকাতের ভূমিকা অপরিসীম।
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় ১২০ কোটি লোক বাস করে দারিদ্র্য সীমার নিচে।আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে দারিদ্র্য যে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগের বিষয় তা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।তাই জাকাতের প্রধান মুখ্য উদ্দেশ্যেই হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন করা। দারিদ্র্য বিমোচনে জাকাতের ভূমিকা সত্যিই বিস্ময়কর। এর ফলে উদ্বৃত্ত সম্পদের একটি বিরাট অংশ প্রতিবছর নিয়মিতভাবে সরাসরি দরিদ্রের হাতে চলে যায়।এর মাধ্যমে দরিদ্র, অক্ষম, অভাবগ্রস্ত লোকদের পূর্ণ অর্থনৈতিক নিরাপত্তাদানের ব্যবস্থ করা যায়।করআনে জাকাতের নির্দেশ প্রদান করে বলা হয়েছ –
সালাত কায়েম করো, জাকাত আদায় করো আর বিনয়কারীদের সাথে মিলিত হয়ে বিনয় প্রকাশ করো।[সুরা বাকারাঃআয়াত ১৪৩]
প্রিয় পাঠক!
বাংলাদেশর প্রেক্ষাপটে আদায়যোগ্য জাকাতের পরিমাণ কম নয়।বাংলাদেশ উৎপাদিত খাদ্য শস্য থেকে ওশর এবং ব্যবসায় বাণিজ্য ও শিল্প পণ্য, নগদ অর্থ ও স্বর্ণ থেকে যদি জাকাত আদায় করা হয় তবে বিশেষজ্ঞদের হিসাব মতে ৬ হাজার কোটি টাকা জাকাত আদায় করা যায়।আর তা সম্ভব হলে ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন করা সম্ভব। তখন দারিদ্র্য জাদু ঘরে গিয়ে খুঁজতে হবে।সবশেষে বলতে চাই, ইসলামের জাকাত ব্যবস্থাই এতিম, ফকির, মিসকিনদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান,চিকিৎসা ও শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো পূরেণের ক্ষেতে নিশ্চিত ভূমিকা পালন করবে।জাকাত ব্যবস্থাই দারিদ্র্য বিমোচনের মোক্ষম হাতিয়ার।
তাই আসুন, জাকাতের মাধ্যমে দরিদ্র, অক্ষম, অভাবগ্রস্ত লোকদের পূর্ণ অর্থনৈতিক নিরাপত্তাদানের ব্যবস্থা করে সুখী, সুন্দর ও উন্নত সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করি।এই প্রত্যাশা নিয়ে সবাইকে আবারো সালাম জানিয়ে আ একানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
লেখকঃ শিক্ষার্থী।
শাকপুরা দারুসুন্নাত কামিল (এম.এ) মাদ্রাসা। বোয়ালখালী,চট্টগ্রাম।