কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
পাইকারি বাজারে বর্তমানে লবণের মুল্যে (কেজি ৫ টাকার কম) কমে যাওয়ায় কক্সবাজারের লবণ চাষিদের মধ্যে দুর্দিন চলছে। লবন বিক্রয় মূল্য কমে যাওয়ার কারণে গত বছরের মজুদকৃত লবণ বিক্রি করতে চাচ্ছেন না কেউ কেউ। এই অবস্থায় ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার হতাশা নিয়ে লবণ চাষিরা চলিত লবণ উৎপাদন মৌসুমে মাঠে কাজ শুরু করেছেন।
কক্সবাজার জেলায় বঙ্গোপসাগরে উপকূল বেষ্টিত বিভিন্ন ইউনিয়নে লবন উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। সবেমাত্র ওই জায়গায় চিংড়ি-ঘের গুটিয়ে লবন উৎপাদনের জন্য মাঠ তৈরির ব্যস্ততম সময় পার করছে লবন চাষিরা। সদর উপজেলার খুরুস্কুল, ভারুয়াখালি, চৌফলদন্ডি, পোকখালী ও ইসলামপুর ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও এখানকার প্রায় কয়েক হাজার লবণ চাষী লবণ উৎপাদনের কাজে নেমেছেন। কিন্তু ন্যায্যমূল্যে লবণ বিক্রি না হওয়ার ফলে এখানকার চাষীরা লবণ উৎপাদনে দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছে। বিগত দিনের মত উপকূলের অনেক আবাদী জমি অনাবাদী হয়ে পড়ে আছে। শেষ পর্যন্ত এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে উপকূলীয় কয়েক সহস্রাধিক লবণ চাষী পরিশ্রমের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে।
বর্তমানে সরকার লবণ চাষীদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য বিদেশ থেকে লবণ আমদানী বন্ধ করে দিলেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারণে চাষিরা ন্যায্য মূল্যে পাচ্ছেন না। সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নের উৎপাদিত লবণগুলো ইসলামপুর শিল্প এলাকায় বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সারাদেশে রপ্তানী হয়ে আসছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প কর্পোরেশন(বিসিক) উপকূলীয় চৌফলদন্ডি, গোমাতলী এলাকায় তাদের নিজস্ব তদারকির মাধ্যমে লবণ উৎপাদন করে থাকে।
উপকূলীয় পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী এলাকার লবণ চাষী সাইফুদ্দিন বলেন, দাম কম হওয়ায় আমরা হতাশায় নিমজ্জিত। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, চাষিদের দুঃখ বিবেচনা করে লবণের দাম বাড়ানো হোক। কারন লবণ চাষ গোমাতলীর ৮০% মানুষের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।
ইসলামপুরের লবণ ব্যবসায়ী হারুনর রশিদ বলেন, সদরে যে লবণ উৎপাদন হয় তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হলে দেশের চাহিদা পূরণ করে বাহিরেও রপ্তানী করতে পারবে। কিন্তু কিছু কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ব্যক্তি স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বাহির থেকে লবণ আমদানি করে দেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। বর্তমান সরকার তা কঠোর হস্তে দমন করায় বর্তমানে প্রায় লক্ষাধিক লবণ চাষী ন্যায্যমূল্য ও পরিশ্রমের যথাযথ মূল্য পাবে এই আশায় লবণ মাঠে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
সরকার যদি উপকূলে উৎপাদিত এসব লবণ দেশের সর্বত্র রপ্তানীতে সহযোগিতা করেন তাহলে এখানকার লবণ চাষীরা আরো বেশি উপকৃত হবে এবং মানসম্মত লবণ উৎপাদনে আরো বেশি মনোযোগী হবেন এমনটি প্রত্যাশা উপকূলীয় ইউনিয়নের কয়েক হাজার লবণ চাষীদের।