ফাহিম শাহরিয়ার, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি:
প্রেমিক বিবাহিত জানার পর তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার দ্বন্দ্বের জেরে ইয়াছমিন আকতার (২০) নামে এক তরুণীকে এসিড নিক্ষেপ করেছে প্রেমিক। এসিডে তরুণীর শরীরের অর্ধেক ঝলসে গেছে।
বুধবার রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রেমিক মো. আজিম (৩০) কে আটক করেছে পুলিশ।
সে উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড খন্তাকাটা এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে ও পেশায় একজন সিএনজি চালক।
বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে।
ইয়াসমিনের পরিবারের অভিযোগ, আজিম ও তার এক সহযোগী রাতের বেলায় ঘরের জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।
জানা যায়, উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল বাশারের মেয়ে ইয়াছমিন আকতারের সাথে অভিযুক্ত আজিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ইয়াছমিন এক পর্যায়ে আজিম বিবাহিত এই বিষয়ে জানতে পারলে তার সাথে সম্পর্ক রাখতে অসম্মতি জানান।
পুলিশ জানায়, রাতে ইয়াছমিনের সাথে দেখা করতে যায় প্রেমিক আজিম। জানালা দিয়ে কথা বলার সময় ইয়াছমিন কিছু বুঝে ওঠার আগে আজিম এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় ইয়াছমিনের বড় ভাই আবু তাহের বাদি হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এবিষয়ে ইয়াসমিনের বড় ভাই বলেন, আমি রাত ২ টার দিকে হঠাৎ করে আমার বোনের চিৎকার শুনতে পেয়ে রুমে ছুটে গেলে দেখি আমার বোনের শরীরের অর্ধেক অংশ ঝলসে গেছে। আমার বোন ইয়াছমিন জানায়, আজিম নামের এক ব্যক্তি তাকে জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়েছে।
তিনি আরও জানান, পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য চন্দ্রঘোনা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। এতে তার অবস্থা গুরুতর হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আমার বোনের সুন্দর জীবন নষ্ট করেছে আজিম। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব মিলকী বলেন, রাত আনুমানিক ৩ টার সময় এসিড নিক্ষেপের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় ইয়াছমিন আকতার নামে এক তরুণীকে এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য চদ্রঘোনা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
ওসি আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে জানতে পেরেছি ইয়াছমিন আকতারের সাথে আসামি আজিমের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। একপর্যায়ে ইয়াছমিন জানতে পারে আজিম বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরী হয়। গতকাল রাতে ইয়াছমিনের বাড়িতে এসে আলাপ করার একপর্যায়ে হঠাৎ তার শরীরে এসিড নিক্ষেপ করে আজিম পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ইয়াছমিন আকতারের ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে থানায় মো.আজিমকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করলে চন্দ্রঘোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার নিজ বাড়ি থেকে আসামি মো. আজিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।