বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৪, ২০২৫

রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল সম্পন্ন

আপডেট:

মহালছড়ি প্রতিনিধি, খাগড়াছড়িঃ
৩০ নভেম্বর ২০২০, বান্দরবান জেলার চিম্বুক
পাহাড়ে ম্রো পাড়ায় অবকাঠামো উন্নয়নের নাম করে ম্রো জনগোষ্ঠীদের পরিকল্পিত উচ্ছেদকরণ এবং পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ম্রোদের জীবন-জীবিকার একমাত্র সহায় সম্বল তাদের বাবজাদা পূর্বপুরুষের ভূমি সম্পত্তিটুকুও আজ সেনাকল্যাণ ট্রাস্ট ও সিকদার গ্রুপ কর্তৃক বেদখলের পথে। তাই আজকে ‘সেনাকল্যাণ ট্রাস্ট’ ও ‘সিকদার গ্রুপ ‘ কর্তৃক “পাঁচ তারকা হোটেল ও এমিউজমেন্ট পার্ক” পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে সম্মিলিত সচেতন ছাত্র সমাজ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে। “উন্নয়নের নামে পাহাড়ে ভূমি বেদখল বন্ধ কর !” এ স্লোগানে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ছাত্র সমাজ ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি জেলায় ছাত্র সমাজ ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ ।
সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠপ্রাঙ্গন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে জেলা শহরে মুক্তমঞ্চে অবস্থান নিয়ে আয়োজিত হয় একটি সমাবেশ যেখানে বক্তারা তাদের প্রতিবাদী বক্তব্য প্রদান করেন।
বিএমএসসি (বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিল) এর কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানীত সভাপতি নিঅং মারমা’র সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন অঞ্জুলাল ত্রিপুরা, টিএসএফ (ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম,বাংলাদেশ) এর সাংগঠনিক সম্পাদক ।
অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ (টিএসএফ) এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রেম ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক নক্ষত্র ত্রিপুরা, বিএমএসসি(বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিল) এর খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সভাপতি ক্যপ্রু মারমা, সাধারণ সম্পাদক নিঅংগ্য মারমা।
এছাড়াও সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন কার্বারী প্রতিনিধি তেজেন্দ্র রোয়াজা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট’র কেন্দ্রীয় প্রতিনিধির সদস্য কৃপায়ন ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন’র প্রতিনিধি নিতি চাকমা, মাতাই পুখিরী স্বেচ্ছাসেবক কমিটির সভাপতি পিন্টু ত্রিপুরা প্রমুখ।

এদিকে রাঙ্গামাটিতেও মানববন্ধন হয় যেখানে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী মংশিচিং মারমার সঞ্চালনায় ব্যক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য মিজ. নিরুপা দেওয়ান, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী রাম্রাচাই মারমা, বিটন চাকমা, জগদীশ তঞ্চঙ্গ্যা, সীমা ত্রিপুরা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাকলি তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

এই মানববন্ধনে ম্রোদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও চাকরিসহ বিভিন্ন সুযোগ- সুবিধা ও উন্নয়নের মিথ্যা-বানোয়াত প্রলোভন দেখিয়ে ম্রো জনগোষ্ঠিকে উচ্ছেদ করে পাহাড়ের সবুজশ্যামল পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও আ্যমিউজমেন্ট পার্ক নির্মাণের প্রতিবাদে ৪টি দাবি উত্থাপিত হয়।
উত্থাপিত দাবিগুলোঃ
১. পার্বত্য জেলা পরিষদের মর্যাদা ও ভাবমূর্ত্তির স্বার্থে অবিলম্বে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিত আইনি কর্তৃত্ব ও এখতিয়ার বহির্ভূত লিজ সংক্রান্ত চুক্তি বাতিল করা।
২. উন্নয়নের নামে পাহাড়ে জুম্মদের উচ্ছেদ বন্ধ করা হোক।
৩. অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের মাধ্যমে এতঞ্চলের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কাজ শুরু করা হোক।

৪. যে উদ্দেশ্যেই চিম্বুক ও নাইতং পাহাড়ের ব্যবহার করা হোক না কেন তা যেন স্থানীয় কার্বারী, হেডম্যান ছাড়াও অত্রাঞ্চলের পাড়াবাসীদের অন্তর্ভূক্ত করে আলোচনা করা হোক।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, ” চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল, পর্যটন চাই না, চাই প্রকৃতির সৌন্দর্য। পাহাড়ের আদিবাসীদের মানুষকে উচ্ছেদ করে পর্যটন আমরা চাই না। পাঁচ তারকা হোটেলের চেয়ে হাসপাতাল ও স্কুল সেখানে বেশি দরকার।” বক্তারা পাহাড়ে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয় এমন সব কার্যক্রম বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টব্যক্তিদের আহবান জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত