সোমবার, আগস্ট ১৮, ২০২৫

মানবতা ও সততার পরিচয় দিলেন বাঁশখালীর বাবুল

আপডেট:

মুহাম্মদ দিদার হোসাইন, বাঁশখালী:
দুনিয়ার সব লোভ লালসাকে পদতলে দিয়ে বিকাশে ভুলে চলে আসা ৩০ হাজার টাকা মুল মালিকের কাছে ফেরত দিয়ে মানবতা ও সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করল চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাবুল।

প্রতারণা করে বিকাশের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ বর্ণনাতীত। আবার ভুল নাম্বারে বিকাশের টাকা চলে গেলে সে টাকা পাওয়া যায়না সহজে। এমনও ঘটনা ঘটে যে, প্রকৃত মালিক ফোন করেও ভুল একাউন্টে চলে আসা টাকার দাবী করলেও অপর প্রান্ত থেকে ফোন নাম্বার বন্ধ করে রাখে। এভাবে অনেকেই নিজের ভুলের দন্ড দিয়েছে কত তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে, ব্যতিক্রম একটি ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে। বাঁশখালী উপজেলার বাবুল নামের এক যুবকের মোবাইলে বিকাশ নাম্বারে ৩০ হাজার টাকা ভুলে চলে এসেছে।
এ নিয়ে বেশকয়েকটি ফোন নাম্বার থেকে টাকার দাবী তুলে ওই যুবকের কাছে ফোন আসে। এতে কে আসল মালিক তা নিয়ে বিব্রত হয় যুবকটি।

বিজ্ঞাপন

যুবকটি ওইদিন বিকাল ৪টার সময় বাঁশখালী থানার ফেইসবুক একাউন্টে ট্যাগ করে (আমার বিকাশ নাম্বারে ভুলে ৩০ হাজার টাকা চলে আসছে। আমি টাকাগুলো কিভাবে ফিরিয়ে দিতে পারি সকলের পরামর্শ চাই। একাধিক নাম্বার থেকে ফোন আসতেছে তাই আমি বিব্রত।) এরকম একটি পোষ্ট করে যুবকটি।

সর্বশেষ আব্দুর রহিম আজাদ নামের এক ব্যক্তি বেশ কয়েকবার ফোন করে ভুলে চলে আসা টাকা তার বলে দাবী করেন। ফোনে কথা বলে বাবুল নামের যুবকটি জানতে পারলো আব্দুর রহিমের নিজ বাড়ী পটিয়া শান্তির হাটে। সে চট্টগ্রাম শহরে চাঁন্দগাও থানা খাজা রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে। বাবুল তাকে স্থানীয় খুলশী থানায় যোগাযোগ করতে বলে। পরে খুলশী থানায় কর্মরত ওয়ারলেস অপারেটর সবিনয় দাশ গুপ্তা ও থানার ডিউটি অফিসার এস আই মোরশেদ আলমের সহযোগীতায় তদন্ত করে টাকার প্রকৃত মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়। টাকার প্রকৃত মালিক আব্দুর রহিম আজাদ।

বিজ্ঞাপন

আব্দুর রহিম আজাদ জানান, ‘আমি আমার শ্বাশুড়ের কাছে ৩০ হাজার টাকা একজন ব্যক্তির মাধ্যমে বিকাশের দোকানে পাঠাতে গিয়েই ভুল নাম্বারে আমার টাকা চলে যায় বাঁশখালীর জনৈক বাবুল নামের যুবকর বিকাশ নাম্বারে। পরে তাকে ফোন দিলে সে প্রকৃত মালিক কিনা সত্যতা যাচাইয়ের জন্য থানা পুলিশের সহযোগীতা নিতে বলেন। তারপর আমি খুলশী থানায় গিয়ে বিষয়টি অবগত করি। আজ রাতে আমার টাকা আমি পুনঃরায় ফিরিয়ে পেয়েছি। এজন্য বাবুলকে ও খুলশী থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বাঁশখালী থানা পুলিশের মাধ্যমে বাবুল প্রকৃত মালিকের বরাবর টাকা হস্তান্তর করছে।
ছাত্রলীগ নেতা, বাশঁখালী থানা ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক, বাঁশখালী থ্রী স্টার ফুটবল একাডেমীর কোচ আবু সাঈদ বাবুল বলেন, ‘আমার ফোনে সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে অপরিচিত একটি বিকাশ নাম্বার থেকে ৩০ হাজার টাকা চলে আসে। এর পর ৪টা নাম্বার থেকে ফোন করে তারা নিজেদের টাকা বলে দাবী করাতে আমি বিব্রত হই। পরে সর্বশেষ আব্দুর রহিম আজাদ নামে এক ব্যক্তি বারবার সে টাকার মালিক দাবী করাতে তাকে থানা পুলিশের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই করতে বলি। খুলশী থানা সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত মালিকের সন্ধান পেয়ে আমাকে ফোন দিলেই আমি প্রকৃত মালিকের বরাবরে বাঁশখালী থানার অপারেশন অফিসার নাজমুল হাসান জয়ের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিই।

বাঁশখালী থানার অপারেশন পুলিশ অফিসার নাজমুল হাসান জয় বলেন, বাঁশখালীর যুবক আবু সাঈদ বাবুল নিজেই থানায় এসে আমার মাধ্যমে প্রকৃত মালিকের বরাবরে ভুলে চলে আসা টাকা বিকাশে হস্তান্তর করে। এতে বাবুল নিজেই সততার পরিচয় দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত