অমিত কর্মকার, লোহাগাড়া:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত বোয়ালিয়া খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় এলাকার কৃষক সমাজ দূর্গতির সম্মুখীন। খালটি বর্তমানে আশীর্বাদের চেয়ে অভিশাপে পরিণত হয়েছে। খরায় পানি শূণ্য এবং বর্ষায় বানের পানিতে প্লাবিত হয় পুরো এলাকা। যে কারণে বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
এ’খাল বিশেষতঃ আমিরাবাদ ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত। উৎপত্তিস্থল উপরে টংকাবতী খাল এবং সর্বশেষ উল্লেখিত ইউনিয়নের তিন খালের মুখের সহিত সংযুক্ত। খালটি ছোট আকারের হলেও এলাকার কৃষকদের জন্য এক সময় আশীর্বাদ স্বরূপ ছিল। ভরাট হওয়ায় এর গুরুত্ব ¤øান হয়ে পড়েছে। ফলে, কৃষকেরাও সুবিধেবঞ্চিত। একদা এ’ বোয়ালিয়া খাল ছিল কৃষকের অমুল্য সম্পদ।
কৃষকরা এলাকায় কৃষি পণ্য উৎপাদনে সুবিধে ভোগ করতেন। মৌসুমভিত্তিক ধান, শাক-সব্জি ও তারি-তরকারী উৎপাদন করতেন খালের পানির উর্বরা শক্তিতে। বর্ষায় বানের পানিতে প্লাবিত হত বিভিন্ন এলাকা। সীমাহীন দূর্ভোগ বেড়ে যেত বটতলী মোটর ষ্টেশন সংলগ্ন জলদাশ পাড়ার বাসীন্দাদের।
আমিরাবাদের কৃষক আবদুস ছমদ জানান, বোয়ালিয়া খাল ক্ষুদ্রকার হলেও কৃষকেরা উপকৃত হতেন বহুলাংশে। এ খালটিতে খরা মৌসুমে বাঁধ (গোদা) নির্মাণ করে পানি জমা করা হত এবং ওই পানি বহু দূর-দূরান্ত এলাকায় সরবরাহ করা হত। ফলে, কৃষকেরা চাষাবাদে সুবিধেভোগ করতেন । আমিরাবাদ ইউনিয়নের কালু সিকদার মসজিদ সংলগ্ন স্থানে এ গোদা নির্মাণ করা হত। খরা মৌসুমে চাষাবাদে কৃষকেরা গোদার পানি পেয়ে আনন্দ-খুশীতে মেতে উঠতেন এবং ধানসহ পছন্দের শাক-সবজি উৎপাদন করে চাহিদা পূরণ করতেন। কোন কোন সময় উৎপাদিত পণ্য হাট-বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতেন কৃষকেরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাওলানা আজিজুল হক জানান, বোয়ালিয়া খালে এলাকার কৃষক সমাজ উপকৃত হতেন। আবার বর্ষার বানের পানিতে কোন কোন গ্রাম্য রাস্তাঘাট তলিয়ে যেত। টংকাবর্তী ও ডলু খালদ্বয়ের মিশ্র প্লাবণে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হত এলাকাবাসী মাঝে। কিন্তু বর্তমানে তা’ বিপরীত। খালটি ভরাট হওয়ায় কৃষক উপকৃত হচ্ছেন না। যে কারণে খালের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ায় বর্তমানে গোদা ও নির্মাণ হয়না। এমনকি পানি চলাচল না করায় খালটি প্রায় ভরাট হয়ে গেছ। কিন্তু বর্ষায় দু’কূল পানিতে প্লাবিত হয়। বর্তমানে পানি ধারণ ক্ষমতা মোটেই নেই। অতএব, খালটি খননপূর্বক সংস্কার করলে এলাকার কৃষক উপকৃত হবেন বলে তিনিসহ অনেকে মন্তব্য করেন।