প্রিয় নগরবাসী,
আমার সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহণ করুন।
আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন করোনাভাইরাস তার আগ্রাসী রূপ নিয়ে পুনরায় ফিরে এসেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিক বাংলাদেশও করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করতে নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
করোনা মোকাবিলায় দিয়েছেন ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা। দেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রেখে জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ইতিমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রশংসিত হয়েছে। সকল স্তরের জনগনকে করোনাভাইরাস সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিশাল আকারের যে প্রণোদনা প্রদান করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
একজন রাষ্ট্রনায়ক কিভাবে যে একাই সবদিক সামলে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন তা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে না দেখলে কেউ বিশ্বাসই করবেন না। বিশেষ করে আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক রেখে দেশকে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় রাখা এবং প্রবাসীদের জন্য নানামূখী সুযোগ সৃষ্টি করে রেমিটেন্স আয় বৃদ্ধি করা করোনাকালীন সময়ে সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্য। এ সাফল্যের অংশীদার দেশের প্রতিটি নাগরিক।
অন্যদিকে হঠাৎ করে ধেয়ে আসা করোনাভাইরাসের মতো শক্তিশালী জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে তৈরী করা এবং নানামূখী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাসের মতো অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল ছাড়া কোনভাবেই সম্ভব ছিলো না। তাইতো উন্নত বিশ্ব যেখানে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে সেখানে বাংলাদেশ যুদ্ধের পাশাপাশি গোলাবারুদ মওজুদের মতো করোনার টিকা সংগ্রহে মাঠে নেমে পড়েছে অনেক আগেই। করোনার টিকা আবিস্কার হওয়ার সাথে সাথেই যাতে দেশের মানুষ টিকার সুফল পেতে পারে সে লক্ষ্যে অগ্রিম টাকা দিয়ে করোনার টিকা নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
আর টিকা ব্যবস্থাপনাকে সহজতর করার মাধ্যমে দেশের ধনী-গরীব সকল শ্রেণীর কাছে বিনামূল্যে করোনার টিকা পৌঁছে দিয়েছেন, যা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি মডেল হয়ে থাকবে। যেখানে বিশ্বের অনেক বড়ো বড়ো দেশ এখনো করোনার টিকা নিশ্চিত করতে পারেনি সেখানে বাংলাদেশের মতো দেশে অনেকেই করোনার দ্বিতীয় ডোজও সম্পন্ন করেছে। আর এরই সুবাধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাফল্যে জুটেছে বিশেষ সম্মাননা, করোনা মোকাবিলায় কমনওয়েলভুক্ত ৫৪ দেশের সরকার প্রধানদের মধ্যে সফল তিন নেতার একজন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি একাই আমাদের ত্রাণকর্তা ও রক্ষাকর্তা। সম্প্রতি আমাদের দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সাথে আবারো দেশের জান মাল রক্ষায় ত্রাণকর্তার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন তিনি। বিশেষ নির্দেশনার মাধ্যমে মানুষকে ঘরে থাকার আহবান জানালেন প্রথম পর্যায়ে। পরবর্তী ধাপে ৮ দিনের লকডাউন এবং এর পরবর্তীতে যাহা আরো ৭ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরই মাঝে আসন্ন রমজানের ঈদ।
প্রতিবছর রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। গতবছরও করোনা সংক্রমণের কারণে দোকানগুলোতে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকাংশে কম লেনদেন হয়েছে। তাই এসব ব্যবসায়িদের কথা মাথায় রেখে আগামীকাল ২৫ এপ্রিল থেকে একটি নির্দিষ্ট সময় সকাল ১০টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল এবং মার্কেট খোলা রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যা ব্যবসায়িদের সমূহ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়ক হবে। তবে এক্ষেত্রে ব্যবসায়িদের প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে। মাস্ক পরিধান ছাড়া কোন অবস্থাতেই যাতে কোন ক্রেতা শপিংমল কিংবা মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। ক্রেতারা যাতে বেশি ভিড় করতে না পারে সেদিকেও নজর রাখতে হবে। শপিংমল কিংবা মার্কেটসমূহ সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে আমাদের ক্রেতা সাধারণকে। প্রতিটি পরিবার থেকে একজন শপিংমল কিংবা মার্কেটে আসবে। কোনভাবেই দলবেঁধে শপিংমল কিংবা মার্কেটে আসা যাবে না। আমাদের সবার মনে রাখতে হবে আগে আমাদের নিজের জীবনকে বাঁচাতে হবে। জীবন বেঁচে থাকলে আমরা সবকিছুই উপভোগ করতে পারবো।
আমাদের পাশ্ববর্তী দেশসমূহ করোনার থাবায় যে কিভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে তা সংবাপত্রের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই আমরা জানতে পারছি। কবরস্থান কিংবা শ্মশানে লাশের ছড়াছড়ি। আমাদের মনে রাখতে হবে একটি পরিবারের একজন সদস্যের মৃত্যু মানে সেই পরিবারের সারা জীবনের কান্না। আসুন আমরা সবাই বেঁচে থাকি। অবশ্যই মাস্ক পরিধান করি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। নিজে বাঁচি এবং অন্যকেও বাঁচাতে সহযোগিতা করি। আর এভাবে আমরা যদি সকলে সচেতন হই তাহলে জীবন ও জীবিকাকে সমুন্নত রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সকল উদ্যোগ অবশ্যই সফল হবে।
নিবেদক
মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন
সাবেক প্রশাসক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন
সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।