বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৪, ২০২৫

চট্টগ্রামের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু?

আপডেট:

নিজস্ব প্রতিবেদক,
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের লিগ স্টেজ ইতিমধ্যে শেষ। ৮ ম্যাচের ৭টিতেই জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকেই প্রথম কোয়ালিফায়ারে জেমকন খুলনার মুখোমুখি হবে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। এই ম্যাচে জয়ী দল সরাসরি ফাইনাল খেলবে এবং হেরে যাওয়া দলেরও আরও একটি সুযোগ থাকছে।

এলিমিনেটর ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকার প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশাল। এবং সেই ম্যাচের জয়ী দলকে আবার খুলনা-চট্টগ্রাম ম্যাচের হেরে যাওয়া দলের মুখোমুখি হতে হবে সেকেন্ড কোয়ালিফায়ারে৷ তবে ঐ সেকেন্ড চান্সের কথা মাথায় না রেখে ব্যাটে-বলে দূর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন-মুস্তাফিজরা নিশ্চয়ই চাইবে আগামীকালের ম্যাচটি জিতেই ফাইনালে চলে যেতে।

বিজ্ঞাপন

পুরো আসরে সবচেয়ে ধারাবাহিক দলের নাম গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। ৮ ম্যাচের মধ্যে যে একটি ম্যাচে তারা বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে হেরেছে সেই ম্যাচ হারের ব্যবধান ছিল মাত্র ৭ রান৷ এছাড়া আসর থেকে বিদায় নেওয়া মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে একটি ম্যাচে তারা জয় পেয়েছিল ১ রানে। এছাড়া বাকি ৬টি ম্যাচই দাপটের সাথে খেলে জিতেছে বন্দরনগরীর দলটি। তাই এবারের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে শিরোপার জোড়ালো দাবিদার তারা৷

বিপিএল না হলেও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ কিন্তু বিপিএলের আদলেই করা৷ এর আগের বিপিএলের আসরগুলোতে কোনবারই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি চট্টগ্রামের কোন ফ্র‍্যাঞ্চাইজি। চলুন এর আগের বিপিএলে চট্টগ্রামের অবস্থা কেমন ছিল তা একনজর দেখে আসা যাক৷

বিজ্ঞাপন

২০১২ সালে বিপিএলের একেবারে প্রথম আসরে ৬ দলের মধ্যে ৫ নম্বরে থেকে আসর শেষ করেছিল বন্দরনগরীর ফ্র‍্যাঞ্চাইজি তামিম ইকবালের চিটাগং কিংস৷

২০১৩ সালে আবার অনেক শক্তিশালী দল গড়ে চিটাগং কিংস। সেবার নাঈম ইসলাম, জ্যাকব ওরামরা পুরো আসর জুড়েই ধারাবাহিক পারফর্ম কিরে দলকে ফাইনালে নিয়ে গেলেও শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ কিছু খেলোয়াড় ইঞ্জুরিতে পড়লে দূর্বল হয়ে যাওয়া দলটি আর শিরোপা জিততে পারেনি। ফাইনালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কাছে হারতে হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে।

২০১৫ সালে নতুন মালিকানায় বিপিএলে আসে চিটাগং ভাইকিংস ফ্র‍্যাঞ্চাইজি৷ সেবার তিল্লেকারাত্নে দিলশান, মোহাম্মদ আমিরদের নিয়ে শক্তিশালী দল গড়েও ৬ দলের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে থেকে আসর শেষ করতে হয় তামিম ইকবালের দলকে।

২০১৬ সালে মোহাম্মদ নবী, ক্রিস গেইল, টাইমাল মিলসদের নিয়ে আরও শক্তিশালী দল গড়লেও সেবার চতুর্থ স্থানে থেকে আসর থেকে বিদায় নিতে হয় চট্টলার দলকটিকে৷

২০১৭ সালে সৌম্য-আনামুলদের নিয়ে গড়া ভঙ্গুর চিটাগং ভাইকিংস ফ্র‍্যাঞ্চাইজিটি আসর শেষ করে ৭ দলের মধ্যে ৭ নম্বরে থেকে।

এতোকিছুর পর বিপিএলে থাকার আগ্রহ হারায় চিটাগং ভাইকিংসের মালিকপক্ষ। শেষমেষ বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুরোধে ২০১৯ সালে কোনরকম একটি দল গড়ে বিপিএলে থাকতে রাজি হয় চিটাগং ভাইকিংস। মুশফিকুর রহিম, রবি ফ্রাইলিংক, ইয়াসির আলীরা দূর্দান্ত পারফর্ম করে একটা পর্যায়ে চট্টগ্রাম বাসীকে শিরোপার স্বপ্ন দেখালেও সেবারও ৭ দলের মধ্যে চতুর্থ থেকে আসর শেষ করতে হয় ডিবিএল গ্রুপের মালিকানাধীন ফ্র‍্যাঞ্চাইজিটিকে৷

২০১৯-২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর নামে বিশেষ একটি বিপিএল আয়োজন করে বিসিবি। যেখানে আক্তার গ্রুপের মালিকানায় বিপিএলে আসে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স৷ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ক্রিস গেইল, ইমরুল কায়েস, নুরুল হাসানরা যে গতিতে যাচ্ছিলেন তাতে সেবারও শিরোপার স্বপ্ন দেখছিল চাটগাঁইয়ারা। কিন্তু আবারও ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! আন্দ্রে রাসেলের জাদুতে চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী রয়্যালসের কাছে হেরে ৩য় হয়ে আসর করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স৷

অর্থাৎ, পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থেকে বিপিএল শেষ করা থেকে শুরু করে তীরে এসে তরি ডোবানো কিংবা কোনরকম পারফর্ম করে সম্মানজনক অবস্থানে থেকে আসর শেষ করা, সব অভিজ্ঞতাই আছে চট্টগ্রামের ফ্র‍্যাঞ্চাইজি গুলোর।

এবারও সৌম্য, লিটন, মোসাদ্দেক, মুস্তাফিজুরদের নিয়ে দল গড়া কিংবা মোহাম্মদ মিথুনকে অধিনায়ক করা এসবকিছুর কারণে কম ট্রল করা হয়নি গাজী গ্রুপের মালিকানাধীন দলটিকে৷ কিন্তু শেষমেষ এই লিটন-মুস্তাফিজরাই কর্ণফুলী তীরের দলটিকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ স্থানে রেখেই প্লে-অফে তুলেছেন।

এবার মোহাম্মদ মিথুনের গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম দল কি পারবে অবশেষে চট্টগ্রাম বাসীকে একটি শিরোপা উপহার দিতে কিংবা দীর্ঘদিনের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে?

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত