মহিউদ্দীন মনজুর-আনোয়ারাঃ
আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় এলাকা রায়পুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম গহিরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে টিকে থাকা যাদের জীবন সংগ্রামের অংশ। সংগ্রামী এই উপকূলবাসীকে এখন আলোর মুখ দেখাচ্ছে ‘শুঁটকি’ ।
এলাকার গহিরা ছত্তার মাঝির ঘাট থেকে শুরু করে গলাকাটার ঘাট, দোভাষী ঘাট,উঠান মাঝির ঘাট,বাছা মাঝির ঘাট,বাইগ্যারো ঘাট সহ ফকিরহাটে এই শুঁটকির প্রক্রিয়াকরণ হয়।
সম্প্রতি ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের কষ্টে দিনাতিপাত করতে দেখা গেলেও ,নিষেধাজ্ঞা শেষের ঠিক ২০ দিন পরে আবারো বঙ্গবসাগরে মাছ শিকার করতে নেমে পড়ে এই এলাকার জেলেরা। নতুন জালে আটকা পড়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ যেমন ছোট চিংড়ি, বড় চিংড়ি, লইট্যা মাছ, উলা মাছ, রিক্সা মাছ, পোয়া মাছ, ছুরি মাছ ইত্যাদি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় গহিরা উঠান মাঝির ঘাটে বেশিরভাগ মাছ ব্যবসায়ীরা সাগর থেকে মাছ শিকার করে সাগরপাড়ে বালির চরে প্লাস্টিক এর বড় পলিথিন বিছিয়ে রোদে মাছগুলো শুকাচ্ছে । আগে কক্সবাজার,কুতুবদিয়া,মহেশখালী সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আনোয়ারায় শুঁটকিমাছ এনে বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা৷
ক্রেতারা প্রতিদিন মাছ কিনতে আসতে দেখা যায়, বিশেষ করে ছোট চিংড়ি যেটা চাটগাঁ ভাষায় “মেতি ইছা’ বলে। যেটার কদর বর্তমানে অনেক বেশি । মাছ কিনতে আসা একটা ক্রেতার কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে চাটগাঁ ভাষায় বলেন (অ বদ্দা আরা ‘মেতি ইছা’ লই যাইর গই) যার অর্থ ভাইয়া আমরা ছোট চিংড়ি শুঁটকি নিয়ে চলে যাচ্ছি। আরেকজন ক্রেতা বলেন,আমরা শুনেছি গহিরাতে মাছ ব্যবসায়ীরা অনেক শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করে রেখেছে,তাই এখানে এসে আমরা শুঁটকি মাছ কিনছি৷ দাম এবং শুঁটকির গুনগতমানে আমরা অনেক সন্তুষ্ট হয়েছি।
এলাকার একজন মাছ ব্যবসায়ী মোঃ নাছিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিগত ইলিশের শেষ মৌসুমে আমরা তেমন সুবিধা করতে পারিনি,কিন্তু এইবারে আমরা সাগর থেকে মাছ শিকারের পর শুঁটকি করে চট্টগ্রামের ফিশারীঘাট থেকে শুরু করে ঢাকার বিভিন্ন জায়গাতে বিক্রি করতেছি৷ আর ঢাকা থেকে এখন তা দেশের বাইরে ও রপ্তানী করা হচ্ছে ।