স্বপ্ন ‘শেখ মুজিব’ হবো!

স্বপ্ন ‘শেখ মুজিব’ হবো!

মো- জিহান উদ্দীন:
আমার বন্ধু শাহ আব্দুল। পূরো নামটা হলো শাহ আব্দুল মুজিব। ছোটবেলা থেকে কোন এক ভাবনায় মুজিব শব্দটা এসেছে বলে মুজিব নাম লাগানো হয়েছে তা না বরং স্বপ্নটায় ছিলো, একজন শেখ মুজিব হওয়া, একজন জাতির জনক হওয়া।

জাতির জনক শেখ মুজিবের মতো সৎ, সাহসী, বীর, সংগ্রামের অগ্রনায়ক এবং তাহার আদর্শ বাস্তবায়ন করে নিজেকে গড়ে তোলা। যদিও এটা একটা কঠিন কাজ, তারপরেও তার মধ্যে” কন্ফিডেন্স ” নামক জিনিসটা বিদ্যমান ছিলো বিধায় ভয় টা কে জয় করতে তার একটু সন্দেহ জাগল না। সব থেকে মজার বিষয় হলো তার চরিত্র এবং কার্যাবলীগুলো কোন না কোন এক দিক দিয়ে আমাদের জাতির জনকের সাথে মিল আছে বিধায় পাড়ার প্রতিবেশিরা তাকে ছোট্ট শেখ মুজিব বলেও আখ্যায়িত করে। শেখ মুজিবের আদর্শ সম্পর্কে যার পরিপূর্ণ ধারণা ছিলো সেটা হলো তার মা মমতার। উনার সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হবে, একজন খাঠি দেশপ্রেমিকা ও মুক্তিযোদ্ধা। যার প্রতিটা কাজে শেখ মুজিবের আদর্শটায় একমাত্র লক্ষ্য। শেখ মুজিব হওয়া কিন্তু উনার ছেলে অর্থাৎ শাহ আবদুল মুজিবের একা ইচ্ছের ব্যাপার নয় বরং তার মা মানে মমতারও ছিলো প্রধান ইচ্ছে যে তার ছেলে বড় হয়ে শেখ মুজিব হবে, শেখ মুজিবের আদর্শ টিকে রাখবে। এদিকে ধীরে -ধীরে শাহ আব্দুল মুজিবের আশা -ভরসা, উৎসাহ -প্রেরণা বাড়তেই থাকে।

যেখানে গমন করে, সেখানেই শেখ মুজিবের আদর্শকে সামনে রেখে কাজ করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। উনার মা, আই মিন, “মমতা “তার ছেলে, মানে শাহ আব্দুল মুজিবকে শেখ মুজিবের গল্প শুনাতেন রোজ।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, প্রতিদিন শেখ মুজিব সম্পর্কে ৫ টা গল্প না শুনলে তার ঘুমই হতো না। বিশেষ কথা হলো এই যে, এমন দেশপ্রেম, এমন দেশের জন্য কাজ করা, এমন দেশকে আগলে রাখা কয়জনই বা পারে। এমনকি আমার দেখা হাজারো দেশপ্রমিকের মধ্যে, আমার বন্ধু শাহ আবদুল মুজিবই সেরা, প্রথমে এবং সামনে। আর থাকবেই না কেনো, যার মধ্যে রাতে -দিনে শুদুই ছিলো শেখ মুজিব আর সেটা উকিঁ দেয় হয়তো স্বপ্নযোগে নয়তো কল্পনার শেষ প্রহরে।

এ্যানি ওয়ে, একদা একবার আমার বন্ধু শাহ আব্দুল মুজিব এক ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য রেডি হলো। আর সাথে আমাকেও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অব্যাহত রাখলো। বললাম আমি একটু ছোট শব্দ করে, বন্ধু আমরা ঠিক যাচ্ছি কোথায়? নিরবতা পালন করল আমার প্রশ্নের উত্তরে। এভাবে ২ বার প্রশ্ন করার পর, বিরক্তিবোধ অনূভবের সাথে উত্তর দিলো, যাচ্ছি একটা মিশনে। আর হ্যাঁ, যেখানেই যাবো না কেনো সাথে তো জাতির জনকের আদর্শ থাকবেই বন্ধু আমার নির্ভীক কন্ঠে বলল। এবং এটাও বলল যে, যেখানে শেখ মুজিবের আদর্শ থাকবে, সেখানে ভয়, বাধা ও সমস্যা নামক জিনিসগুলো অনেক দূরে থাকবে। আমি অবাক চোখে তার দিকে অনেক্ষণ থাকিয়ে থাকলাম আর মনে মনে এটাও বললাম যে, বন্ধু তুইই,,একমাত্র পারিস, শেখ মুজিবের আদর্শকে বাঙ্গলার জমিনে ঠিকে রাখতে। এভাবে ২০ মিনিট উভয়ের কথোপকথনের পরে গন্তব্যস্তলে এসে গেলাম। মুজিব বলল আসতে পারিস বন্ধু ভয়ের কোন কারণ নায়। তখন আমার মনে হলো সান্তনা নামক জিনিসটা তার থেকে পেলাম। এদিক -সেদিক না থাকিয়ে পূরো থাকেয় অনুসরণ করতে লাগলাম।

অবশেষে এটাও কন্ফার্ম হলাম যে, তার মিশন টা হলো জবের ইন্টারভিউ। কোম্পানিও টা ছিলো বেশ সুন্দর এবং বিশাল টাইপের। অনেক মানুষের আনাগুনা। অতঃপর ২০ মিনিট চলে গেল এভাবে। সময়ের দিকে দর্শন না দিলেও ঠিকই দর্শন হলো আমার বন্ধু শাহ আব্দুল মুজিবের দিকে হাতছানি দেওয়া লোকটা কে। অতঃপর মুজিব সেখানেই গেলো যেখানে তার ইন্টারভিউ নেওয়ার কথা। আমিও চুপি চুপি তার পিছনে গেলাম এবং ঐই টায় আমাকে সবচাইতে বেশি নাড়া দিচ্ছিলো যে, ইন্টারভিউ জিনিসটা কেমন! দেরি না করে তাদের হাতের বাম পাশের দিকটায় দাড়ালাম অতঃপর, যেখানে কি না তাদেরকে একটু দেখা যায় এবং মনে হচ্ছিলো তাদের কথাও শুনতে পাবো বেশ। তারপর ইন্টারভিউ শুরু হলো। এ দিকে আমি রেডি তাদের কথাগুলো শ্রবণ করার জন্য। হয়তো নিজেকে এইভাবেই রেডি করালাম যাতে একটা কথাও মিসস না হয়।

১ম প্রশ্ন ইন্টারভিউয়ারের মুখ থেকে ছোটা যে,দেশকে তুমি কেনো ভালোভাসো? বন্ধু আমার একটু মৃদু হেঁসে উত্তর দিলো, আমি দেশকে ভালোভাসি কিন্তুু ততটা না, যতটা আমি জাতির জনক শেখ মুজিবকে লাভ করি। যিনি বাঙ্গার বুকে না জন্মালে, যিনি বাঙ্গালিদেরকে একত্রে না জাগালে, যিনি নেতৃত্ব না দিলে হয়তো আমরা আজকে স্বাধীন একটা বাংলাদেশ পেতাম না।

২য় প্রশ্ন :- কেন এতো আদর্শ থাকতে তুমি শেখ মুজিবের আদর্শ গ্রহণ করতে গেলে? আমার বন্ধু উত্তর দিলো বাট ইন এ ওয়র্ডে যে শেখ মুজিবের আদর্শের মাধ্যমেই কেবল একটা ভালো জাতি ও দেশ পাওয়া যায়। এই কথা শুনার পর ইন্টারভিউয়ার নিজেই হতবম্ব হয়ে পড়লেন। আর মনে হয় মনে মনে এটায় ভাবতেছেন যে, এই ছেলেটাতো একজন খাটি দেশপ্রেমিক। যে ছেলেটা প্রতিটামুহূর্ত দেশের জন্য কাজ করে যেতে প্রস্তুত সেই ছেলেকে হাতছাড়া করি কিভাবে? কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করে, আমার বন্ধুকে বলল, স্যার এই বার আপনি আসতে পারেন। গেল কিছুদিন এভাবে। তারপর হঠাৎ একটা বার্তা আসলো যে আমার বন্ধুর নাকি চাকরিটা কন্ফার্ম। এই কথা শুনে আমি যতোটা খুশি হয়েছি, আমার বন্ধু তার অর্ধেকও হয়নি। আমি তো অবাক! এতো বড় একটা কোম্পানিতে তার চাকরি হলো অতচ তার মধ্যে কোন খুশি নায়। আস্চর্য মনে তাকে প্রশ্ন করলাম, বন্ধু আজকে তো তোর একটা খুশির দিন সো তুই আজকে নিরব কেনো। রাগান্বিত কন্ঠে বন্ধু বলতে লাগলো আমাকে, কিসের চাকরি, কিসের আনন্দ, কিসের হাসঁি। তোর কি মনে হয়? আমান সব প্রচেষ্টা, সাধনা ও সংগ্রাম সবকিছু কি ছিলো এই চাকরি টা পাওয়ার জন্য? যদি এমনটাই মনে করিস তাহলে এটা তোর ভুল। একটা কথা মনে রাখ,যত দিন আমি আমার সর্বোচ্ছ সহযোগীতায় দেশের মানুষকে শেখ মুজিবের আদর্শ গ্রহণ করাতে না পারি, যতদিন শেখ মুজিবের আদর্শকে বাংলার জমিনে টিকে রাখতে না পারি, ততদির পর্যন্ত আমার কোন হাঁসি-খুঁশি থাকবেনা এবং আমার টার্গেট থেকে এক বিন্দু পরিমাণও নড়বো না। আর এই জন্য আমার চাকরি কেনো, যদি মরণও আসে তাহলে ঐ টা হবে আমার সুখের মরণ। আর এটায় আমার প্রথম এবং শেষ কথা। তাই আজ থেকে প্রতিজ্ঞা কর যে দেশকে ভালোভাসব, দেশের স্বার্থেরর জন্য কাজ করে যাবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here