ইলিয়াছ সুমন:
দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াই মোটামুটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সন্দ্বীপ পৌরসভায় শনিবার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সন্দ্বীপ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র বাউরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রের বাহিরে কয়েকটি ফাঁকা গুলি বর্ষনে এলাকায় কিছুটা আতংকের সৃষ্টি হলেও পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। এ দিকে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ ও নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী জিএস আবুল বশার দুপুর ২টায় তার সন্দ্বীপ পৌরসভাস্থ বাড়ীতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হলে দু’একটি ভোট কেন্দ্র ছাড়া বাকি ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল মোটামুটি সন্তোষজনক। তবে দুপুরের পরে অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রগুলো ফাঁকা থাকতে দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রশাসনের ব্যাপক উপস্থিতি ও কড়া নজরদারী। নির্বাচনে প্রায় কেন্দ্রগুলোতে সার্বিক পরিস্থিত ছিল শান্তিপূর্ণ। কোথাও কোন বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোক্তাদের মাওলা সেলিম সকাল ৮ টায় তার ৩নং ওয়ার্ডের মোমেনা সেকান্দর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জিএস আবুল বশার ৮নং ওয়ার্ডের খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসায় সকাল ৮:১০ মিনিটে তার ভোট প্রদান করেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোক্তাদের মাওলা ৩নং ওয়ার্ড মোমেনা সেকান্দর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে নিজ ভোট প্রদান শেষে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের বলেন- প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের প্রতি আস্থা রেখে পৌরবাসী তাদের উন্নয়নে নগর পিতা হিসেবে আমাকে বেছে নেবে, এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
এদিকে নির্বাচনের আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্ধি কাউন্সিলর প্রার্থী মাকছুদুর রহমান জাবেদ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে (উটপাখি মার্কা) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
দুপুর ১২টার দিকে ৭,৮,৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী সেলিনা আক্তার লাভলী (চশমা মার্কা) একই ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
এ ছাড়া ভোটের দিন এ প্রতিবেদকের কাছে দু’এক জন প্রতিদ্বন্ধি কাউন্সিলর প্রার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।
এদিকে ভোট কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থক ভোটারদের বাঁধা প্রদান, জোর করে নৌকা মার্কায় সীল মারা, এজেন্টদের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে বাঁধা, নির্বাচনের পূর্বে সকল প্রকার প্রচারণায় বাঁধাদান সহ নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জিএস আবুল বশার। ভোটের দিন দুপুর ১টায় তিনি তার বাড়ীতে এক সংবাদ সম্মেলন আহবান করে এ অভিযোগ করেন।
এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন-তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও পৌর বিএনপি’র সভাপতি আহসানুল কবির রিপন তালুকদার, উত্তর জেলা বিএনপি নেতা এডভোকেট আবু তাহের, আজমত আলী বাহাদুর ও সন্দ্বীপের বিএনপি নেতা কাজী এমদাদুর রহমান আলমগীর। তবে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোক্তাদের মাওলা সেলিম বলেন- তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পরাজয়ের আশংকায় এ বানোয়াট প্রলাপ বকছে।
বিকাল ৪টার পরে ভোট গননা শেষে সন্দ্বীপ পৌরসভার মোট ১৭ টি ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোক্তাদের মাওলা সেলিম নৌকা প্রতীকে ১৬৭২৭ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে সন্দ্বীপ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি বিএনপি’র জিএস আবুল বশার ধানের শীষ মার্কায় পেয়েছেন-৬২৭ ভোট।