রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষন করিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে শ্রীঘরে স্বয়ং বাদী

এম এ সাত্তার, কক্সবাজার:
মানুষ সামাজিক জীব হলেও প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষের পাল্লা দিন দিন ভারী হয়ে যাচ্ছে। এই গোল পৃথিবীতে বসবাস করতে গেলে একজনের সাথে অন্য জনের ধাক্কা লাগতে পারে। তাই বলে রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় ,অনাত্মীয় যে প্রকারের মানুষ হোক না কেন বর্তমানে কেউ কাকে ছাড় দিতে নারাজ। নানা ফন্দি ফিকির করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজ পরিবারের আপনজনকে বলি দিতে কুণ্ঠাবোধ করছে না।এসব মিথ্যা কলাকৌশল অবলম্বন করেও আইন-আদালতের মারপ্যাঁচে পড়ে নানা হয়রানি, আর্থিক ক্ষতি ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন তো আছেই। আবার কেহ প্রতিপক্ষের হাতে মারা যাচ্ছে। কেহ দেশান্তর হচ্ছে। দেশে প্রতিদিন এরকম কত নাটকিয় ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে আজ মানুষকে দারুন ভাবে ভাবিয়ে তুলছে। এবার কক্সবাজারে প্রতিহিংসাপরায়ণে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে লিংকরোড এলাকার মোঃ ইসমাইলের স্ত্রী রওশন আক্তার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এক যুবতি মহিলা তার ঘরে এনে অন্যের দ্বারা ধর্ষণ করান। এরপর নিজের মেয়েকে ধর্ষন করেছে বলে অভিযোগ তুলে নিজ বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। যার নং ২৫/১৯। উক্ত মামলায় পুলিশ আসামি নাসির ও আবদুল্লাহকে আটক করেন। জব্দ করা হয় ধর্ষিতার ব্যবহৃত কাপড় চোপড়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন এ মামলা সম্পূর্ণ ভূয়া ও সাজানো। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে আদালত বাদীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিলে পুলিশ বাদীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার সদরের লিংক রোডের মুহুরি পাড়া এলাকায়। মানুষ যে মনুষ্যত্ববোধ বিবর্জিত হয়ে হিংস্র পশুর চাইতে খারাপ হয়ে গেছে তার জ্যান্ত প্রমান হচ্ছে এই সব কিছু ঘটনায়।যা এলাকার সাধারণ মানুষকে নাড়া দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার মডেল থানার অপারেশন অফিসার মোহাম্মদ ইয়াসিন এবং ভুক্তভোগীদের সুত্রে জানাযায়, মহুরীপাড়ার মোঃ ইসমাইলের সাথে তারই প্রতিবেশি নাসির উদ্দিন, খালকুজ্জমান, আবদুল্লাহ এবং জাকের আহমদের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন। প্রতিপক্ষকে কোন ভাবেই ঘায়েল করতে না পেরে ইসমাইলের স্ত্রী রওশন আক্তার নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আল আমিনের মেয়ে রোমানা (ছদ্ম নাম) কে বাড়ির কাজের জন্য ফুঁসলিয়ে এনে তার নিকত্মীয় নুরুদ্দীনকে দিয়ে ধর্ষন করিয়ে
হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন। এ ঘটনার সাথে বাদী রওশন আক্তার ,তার ছেলে সরওয়ার , নুর হোসেন ও মোর্তজা নামের আরেক মহিলা জড়িত রয়েছে। ধর্ষিতাকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তার জবানবন্দী গ্রহন করে এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য বের হওয়ার পর আদালত উক্ত মামলার বাদী রওশন আক্তারকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। বর্তমানে উক্ত মামলার বাদী কারাগারে রয়েছে। অন্যান্যরা পালাতক বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ ইয়াসিন।

কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান কবির জানান, বিষয়টি খুবই জটিল। ধর্ষনের ঘটনার পর আমরা বাদীর কথা অনুযায়ি ২ জনকে আটকও করেছি। পরে তদন্ত কর্মকর্তার তৎপরতা এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বের করে বিষয়টি সন্দেহ হলে বাদীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে রোহিঙ্গা তরুনি এনে তার আত্মীয়কে দিয়ে ধর্ষন করিয়ে প্রতিপক্ষ কে আসামী করতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেন বাদী। পারিবারিক শত্রুতা, জমি বিরোধ, সীমানা বিরোধ, পূর্ব শত্রুতার জেরে মানুষ প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে কতক নাটকিয় ঘটনা ঘটালেও আইনের হাত থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। জড়িতদের কে আইনের আওতায় আনা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here