আব্দুল করিম, চট্টগ্রামঃ
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল দীর্ঘ তিন মাস যাবত চট্টগ্রামে তাদের ভু-সম্পত্তির উপর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আসছে। এতে সরকারের কয়েকশ কোটি টাকা ব্যয়ে একদিকে যেমন কয়েক হাজার একর জায়গা দখল মুক্ত হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে চাকরি কিংবা ব্যবসা স্থল হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ছে কয়েক হাজার পরিবার। আর এই বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে অনেকেই নিরুপায় হয়ে পা বাড়াচ্ছে অন্যায় পথে।
ইতিপূর্বে রেলওয়ের চলমান উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন কালে একাধিক হতদরিদ্র ছিন্নমূল পরিবারের লোকজন এধরণের মন্তব্য করেন। তারা বলেন চট্টগ্রাম শহরের বেশির ভাগই জায়গা রেলের। আমরা নদী ভাঙ্গা ভিটা বাড়ি হারা মানুষগুলো পেট আর পরিবারের বরণ পোষণ চালাতে কেউ রিক্সা, ভ্যান, কেউ বা কুলি মজুরি করে ডাল ভাত খেয়ে কোনরকম বেঁচে আছি। আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষদের পক্ষে অট্টালিকায় ভাড়া দিয়ে থাকা সম্ভব নয়। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে সরকারি রেলের জায়গার উপর পুরাতন টিন বেড়া দিয়ে থাকতাম। বর্তমান সরকারের রেলমন্ত্রী ও তাদের কর্মকর্তাদের রোষানলে আজ সেই টুকুও হারিয়েছি।
এদেশে গরীবের পক্ষে কেউ নেই। এসময় আক্ষেপ করে অনেকেই বলেন রেল কতৃপক্ষ দেখে দেখে গরীবের বস্তি গুলোতে স্টিম রোলার চালালেও চলমান উচ্ছেদ অভিযানে ধরা চোয়ার বাহিরে রয়েছে রাঘব বোয়ালদের দখলে থাকা রেলওয়ে বাংলোর আশপাশ শত শত একর জায়গা।
সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি নগরীর খুলশী থানাধীন ওয়ার্লেস এলাকায় ১৭০ টি দোকান গৃহে উচ্ছেদ চালায় রেলওয়ে। এতে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় আড়াইশ পরিবার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি বলেন সরকার বেকারত্ব দুর করার কথা বললেও এ উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান বাজারে সরকারি আধা সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরি পাওয়া সোনার হরিণ। লাখ টাকা ঘুষ ছাড়া যেখানে চাকুরী হয় না সেখানে বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন ভাবে তৈরি করা এসকল বেকারত্বদের চাকরি কে দিবে। কিভাবে চলবে এদের সংসারের বরণ পোষণ?? এদিকে হঠাৎ এমন বেকারত্ব সমাজে শান্তি শৃংখলা বিঘ্নিত হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন সুশীল সমাজ।তাই এধরণের বেকারত্ব সৃষ্টি করার আগে সরকার কে ভালো করে ভেবে দেখা প্রয়োজন বলেও অনেকেই মত প্রকাশ করেন।