চট্টগ্রামে মিলাদুন্নবী’র ৫০তম জুলুস রোববার; গিনেস রেকর্ডে নাম লেখাতে আবেদন!

সৈয়দ আবুল হাসনাত জিসান,
১২ই রবিউল আওয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী(স.) উপলক্ষেে জশনে জুলুস(র‍্যালি) উপলক্ষে প্রতিবারের ন্যায় এবারও নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর, নারায়ে রিসালাত ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ)’ স্লোগানে মুখর থাকবে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম।

মানবসমাজে যখন ‎পাপাচার, দুরাচার, ব্যাভিচার, মিথ্যা, হত্যা, লুন্ঠন, মদ্যপান, জুয়ায় ভরপুর ছিল যখন অন্যায়-অপরাধ, দ্বন্ধ-সংঘাত, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য, নৈরাশ্য আর হাহাকার বিরাজ করছিল ঠিক তখনই মানবতার মুক্তির দূত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সারা জাহানের হিদায়েতের জন্য আবির্ভূত হলেন রাসুল (সাঃ) হলেন বিশ্ব মানবতার জন্য আল্লাহর এক অনন্য রহমত স্বরুপ প্রেরিত। আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, “আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি বিশ্ব জগতের জন্য বিশেষ রহমত স্বরুপ।”

১২ই রবিউল আওয়াল মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর আগমনের খুশিতে বিশ্বে পালিত হয় জশনে জুলুস। ১২আউলিয়ার পূর্ণভূমি চট্টগ্রাম শহরে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উপলক্ষে সর্বশেষ গতবছর অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪৯ তম জুলুস। চট্টগ্রামে করোনা মহামারী কাটিয়ে গতবছর অনুষ্ঠিত ৪৯ তম জুলুশে নেতৃত্ব দেন আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ মাদ্দাজিল আলী।

আনজুমানে রাহমানিয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর আগমনের খুশিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উপলক্ষে প্রতিবছর জশনে জুলুস আয়োজন হয়।আনজুমানে রাহমানিয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ জসনে জুলুসের র‍্যালি হয় এটি।

জানা যায়, হযরতুল আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ’র (রহ.) নির্দেশনায় ১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষে পবিত্র জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) জুলুস বের হয়েছিল,১৯৭৪ সালে নগরীর ভলুয়ারদিঘির খানকাহ থেকে মাত্র হাজার দুয়েক লোক শুরু করেছিলেন জশনে জুলুস।

জুলুস উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন রাস্তাঘাটে লাখ লাখ মানুষের ভীড় থাকে।সবার মুখে ধ্বনিত হয় স্লোগান নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর, নারায়ে রিসালাত ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ)’সহ নানান স্লোগান।

চলতি বছর ১৯৭৪ সালে শুরু হওয়া এই জুলুশের সূবর্ণ জয়ন্তী র‍্যালি হবে।আগামী ৯ই অক্টোবর(রোববার) ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরির দিন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ﷺ উপলক্ষে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত জুলুশে নেতৃত্ব দিবেন আওলাদে রাসুল, মুর্শিদে বরহক, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও ত্বরিকত, হাদিয়ে দ্বীন ও মিল্লাত, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মু)’র সদারতে এবং পীরে বাঙাল মুর্শিদে বরহক আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবের শাহ ও শাহজাদা শাহসূফি সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাশেম শাহ (মু.)’র উপস্থিতিতে ৫০তম বিশ্বের বৃহত্তম পবিত্র জশনে জুলুছ-এ ঈদে মিলাদুন্নবী ﷺ অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার সকাল ০৮ টায় নগরীর আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া চট্টগ্রাম’র সম্মুখ থেকে বের হয়ে বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, পাঁচলাইশ মোড় হয়ে কাতালগঞ্জ, অলিখা মসজিদ, চকবাজার গুলজার টাওয়ার মোড়, প্যারেড ময়দানের পশ্চিম পাশ, গনি বেকারি (ডানে মোড়), কাস্তগীর স্কুল (ডানে মোড়), শহিদ সাইফুদ্দিন রোড় হয়ে আস্কার দীঘির পাড়, কাজির দেওরী (ডানে মোড়), আলমাস (বামে মোড়), ওয়াসা মোড়, জিইসি, ২নং গেইট থেকে পুনরায় মুরাদপুর, বিবিরহাট হয়ে লাকো-কোটি আশেকে রাসুলের অংশগ্রহণের এই জুলুস দুপুর ১২টার সময় জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া’র ঐতিহাসিক জুলুস ময়দানে জমায়ত হবে। এদিন দুপুর ১টায় মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার পর হুজুর কেবলার ইমামতিতে যোহরের নামায আদায় হবে এবং মিলাদ-ক্বিয়াম ও আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে জশনে জুলুছের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে বলে জানা গেছে।

যানা যায়, চট্টগ্রামের জুলুস’কে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুস হিসেবে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখাতে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে জুলুস আয়োজনকারী সংস্থা আনজুমান-এর রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট।যার পরিপ্রেক্ষিতে এইবারের জশনে জুলুস পর্যবেক্ষণ করবে গিনেজ বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ডের ম্যানেজমেন্ট টিম, একটি সংবাদ মাধ্যম’কে তথ্য’টি জানিয়েছেন ট্রাস্টের মহাসচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here