নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাচ্চাদেরকে মাদ্রাসার হোস্টেলে সাক্ষাত দিয়ে বাসায় ফেরার পথে এক গৃহবধূ অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন । ১৮ মার্চ ২০২০ বুধবার বিকেলে ফেনী সদরের হাজারী রোডে অপহরণ ও বিজয় সিং দিঘির পাড়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে । ধর্ষিত গৃহবধূকে আহত অবস্থায় ফেনী শাহীন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
জানা যায়, বুধবার বিকেলে গৃহবধূ হাফসা আক্তার লাকি তার দুই সন্তান রায়হান করিম ও রাহাত করিমকে ইবনে ওমর ক্যাডেট মাদ্রাসার হোস্টেলে সাক্ষাত দিয়ে দাগনভূঁইয়া থানার গৌতমখালি গ্রামে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে রওয়ানা দেন ।কিছুক্ষণ চলার পর হাজারী রোডের মাথায় চারজন অপরিচিত লোক অটোরিকশাতে জোরপূর্বক উঠে বসে এবং চালককে নির্দেশ দেন তাদের কথামতো গাড়ি চালাতে । দুইজন লোক গাড়ির পর্দা টেনে মহিলার হাত-মুখ বেঁধে বিজয়সিংহ দিঘীর দক্ষিনপাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে অটোরিকশা চালককে মারধর করে চলে যেতে বলে। তারপর গৃহবধূকে একটি ঝোপে নিয়ে তার ব্যগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে তারা গৃহবধূকে দিঘির উঁচু পাড় থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচের দিকে ফেলে দিয়ে চলে যায় ।
এতে মহিলার ডান পা জখম হয় । পরে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে শাহীন ক্লিনিকে ভর্তি করেন। এ বিষয়ে ধর্ষিত নারী বাদী হয়ে চারজনকে অভিযুক্ত করে ফেনী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন যার নম্বর ১৭, তারিখ ২১ মার্চ ২০২০। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি । ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামিদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনার ব্যপারে নির্যাতিতা মিসেস হাফসা আক্তার লাকির সাথে হাসপাতালে প্রতিবেদকের কথা হয় । তিনি বলেন সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে আমার স্বামী লিটন দেশ ছেড়ে বর্তমানে কানাডায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন । একটি প্রভাবশালী সংঘবদ্ধচক্র আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গ্রামের বাড়ি ও শহরের বাসায় হামলা করেছিল। ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে আমি আমার বাবার বাড়িতে থাকি। গোপনে বাচ্চাদেরকে হোস্টেলে দেখতে এসেছিলাম কিন্তু আমার ইজ্জত রক্ষা করতে পারিনি। তারা আমাকে যৌন নির্যাতনের পর হত্যার উদ্দেশ্যে অনেক মারধর করেছে এবং ১৫/২০ ফুট উপর থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে । আল্লাহর অশেষ রহমতে ও আমার ছেলে মেয়ের ভাগ্যে জীবন রক্ষা পেয়েছি । আমি মনে করি প্রভাবশালী মহলের নির্দেশে ও ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী গ্রুপ বারবার আমার পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে এবং সর্বশেষ আমাকে অপহরণ, শারীরিক নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেছে ।
কিন্তু পুলিশ আজবধি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নিতে পারেনি । ফলে সারাক্ষণ আমি বাচ্চাদেরকে নিয়ে জীবন শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছি।