মাসুদা আকতার তিশা, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আত্নকর্মসংস্থান হিসেবে ফুল চাষ পেশা খুবই জনপ্রিয়।ফসল চাষের চেয়েও বেশি লাভবান হওয়া যায় ফুল চাষে।ফুলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।তার মধ্যে গ্ল্যাডিওলাস ফুল খুবই জনপ্রিয়।এ ফুলের চাষ একদিকে যেমন লাভজনক, অন্যদিকে তেমন নান্দনিক এবং বাজারে এ ফুলের চাহিদাও অনেক বেশি। যে কোনো ধরনের মাটিতে চাষ ফুলের চাষ করা যায়।
ফুল ভালোবাসার প্রতীক।তাছাড়া আমরা বিভিন্ন দিবসে এক অপরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকি, এবং জাতীয় দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শহীদমিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই।বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুল দিয়ে ঘর সাজানো আরো অনেক কাজ করে থাকি।আমাদের নিত্যদিনে ফুলের ভুমিকা অপরিসীম
সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য আর্দ্র ও ঠান্ডা আবহাওয়া দরকার। ১৫-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গাছ ভালোভাবে বাড়ে। চাষের জন্য পূর্ণ সূর্যালোক দরকার হয়। কারণ ছায়ার এ ফুল ভালো হয় না।
সব ধরনের মাটিতে এ ফুল চাষ করা করা গেলেও বেলে দো-আঁশ মাটি বেশি উপযোগী। এবং অধিক বেশি উৎপাদন করে লাভবান হওয়া যায়।
এ ফুলের চাষ করার জন্য বাংলা কার্তিক (মধ্য-অক্টোবর থেকে মধ্য-নভেম্বর) মাস উত্তম সময়।
রোপণের সময় জমিতে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২৫ সেমি হতে হবে। তবে বাণিজ্যিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে ১৫*২০ সেমি দূরত্বে রোপণ করা যেতে পারে।
এবং সার দিতে হবে হেক্টরপ্রতি ১০ টন পচা গোবর, ২০০ কেজি ইউরিয়া, ২২৫ কেজি টিএসপি এবং ১৯০ কেজি এমপি। গোবর, টিএসপি ও এমপি জমি তৈরির সময় ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারকে সমান দুই ভাগে ভাগ করে ৪ পাতা বের হওয়ার পর অর্ধেক এবং বাকি অর্ধেক ৭ পাতা বের হওয়ার পর অর্থাৎ স্পাইক বের হওয়ার সময় সারির দু’পাশে ৫ সেমি গভীরে পার্শ্ব প্রয়োগ করতে হবে।সেচমাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রস থাকতে হবে। তাই প্রয়োজনমতো সেচ দিতে হবে।
গ্ল্যাডিওলাসের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা হচ্ছে মাটি উঠানো। গাছের ৩-৫ পাতা পর্যায়ে একবার এবং প্রয়োজনবোধে ৭ পাতা বের হওয়ার পর অর্থাৎ স্পাইক বের হওয়ার সময় গাছের গোড়ার দু’পাশ থেকে মাটি তুলে দিতে হবে। মাটি তুলে দিলে জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকে এবং বাতাসে গাছ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সেচ দেওয়ার গাছ মাটির উপরে উঠে এলে পাশ থেকে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।জমিকে অবশ্যই আগাছমুক্ত রাখতে হবে। আগাছামুক্ত করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যাতে অঙ্কুরোদগমে কোনো ক্ষতি না হয়।
এ ফুল চাষে প্রতিহেক্টর জমিতে প্রায় ২৪ টন ফুল বা স্টিক পাওয়া যায়। অনেক ব্যবসায়ীরা এ ফুল চাষ করে খুব ভালো লাভবান হয়েছে।একই সাথে অনেক ফুল বিদেশে রপ্তানি করে থাকে।
দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির ফলে সমাজের নানা স্তরে ফুলের ব্যবহার বাড়ছে।সাম্প্রতিক সময়ে ফুলের বাণিজ্যিক চাষাবাদ অর্থনিতীর নতুন সম্ভাবনায় ভুমিকা রাখছে।